জাহাঙ্গীরপুরীর ঘটনায় বিজেপি চালিত পুরসভার ওপর ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত, আপাতত বন্ধ উচ্ছেদ
আগাম নোটিস ছাড়াই উত্তপ্ত জাহাঙ্গিরপুরীতে (Jahangirpuri) উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে দিল্লি পুরনিগম। এই অভিযোগে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মামলা ওঠার পর ওই এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। অভিযোগ, এরপরেও উচ্ছেদ অভিযান চালায় পুরনিগম। যার পর বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে ক্ষোভ প্রকাশ করল শীর্ষ আদালত। আদালতের মন্তব্য, “আমাদের নির্দেশের পরেও উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।” এইসঙ্গে আপাতত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, গতকাল দিল্লি পুরনিগমের উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল মুসলিম সংগঠন জামিয়াত-উলামা-ই-হিন্দ (Jamiat Ulema-e-Hind)। তাদের অভিযোগ ছিল, নির্মাণ ভাঙার আগে নিয়ম মতো নোটিস দেওয়া হয়নি। সিনিয়র অ্যাডভোকেট দুষ্মন্ত দাভে, কপিল সিবাল, পাভ সুরেন্দ্রনাথ এবং প্রশান্ত ভূষণও সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি উত্থাপন করেন। এরপরেই উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। পুরনিগম সেই নির্দেশ ঠিক মতো পালন করেনি বলে অভিযোগ ওঠে গতকালই।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছিলেন, সুপ্রিম নির্দেশের পরেও বেশ কিছুক্ষণ পুরনিগমের অভিযান চলেছিল। যে সময় সেখানে পৌঁছান বাম নেত্রী বৃন্দা কারাত। তিনি বুলডোজারের সামনে দাঁড়িয়ে উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করেন। এরপরেই তা বন্ধ হয় বলে জানা গিয়েছে। বৃন্দা স্থানীয়দের এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্যও অনুরোধ জানান। এবং সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দশের জন্য অপেক্ষা করতে বলেন স্থানীয়দের। এদিনের শুননিতেই পুরনিগমের কাজে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের মন্তব্য, “সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত মেয়রকে জানানো হয়েছিল। তারপরেও বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখব।” পাশাপাশি আপতত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখার দিয়েছে আদালত।
এদিনের শুনানিতে আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতকে জানানো হয়, গোটা ঘটনায় কেবলমাত্র একটি সম্প্রদায়কেই বিপাকে ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও বলা হয়, জাহাঙ্গিরপুরীর অশান্তির পর বিজেপি রাজ্য সভাপতি পুরনিগমকে চিঠি দিয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, সরকারি জমি দখল করে বেআইনি নির্মাণ গড়ে তুলেছে অশান্তিতে অভিযুক্তরা। এরপরই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে দিল্লি পুরনিগম।
এদিকে পুরনিগমের উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ীও বিচার চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। গণেশ কুমার গুপ্তা নামের ওই ব্যক্তির শরবতের দোকান ভাঙা পড়েছে পুরসভার গতকালকের অভিযানে। গণেশ অভিযোগ করেছেন, দিল্লি উন্নয়ন পর্ষদের অনুমদিত তাঁর দোকান ভেঙে দিয়েছে পুরনিগম। তাঁর কাছে দোকানের যাবতীয় নথি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গিরপুরীতে গরিব মানুষের জীবন-জীবিকা এবং মাথার ছাদের উপর যেভাবে বুলডোজার চালানো হয়েছে তা নিয়ে আগেই তৃণমূলের তরফে তীব্র নিন্দা করা হয়েছিল। আজ হিংসা বিধ্বস্ত দিল্লির ওই এলাকায় যাচ্ছে তৃণমূল সংসদীয় দল। সূত্রের খবর, সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন ও মহুয়া মৈত্র ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন সাংসদ দলে থাকবেন।