চটশিল্পে সঙ্কটের জন্য দায়ী কেন্দ্র, মোদী সরকারের দিকেই আঙুল উঠল সংসদীয় বৈঠকে
চটশিল্পের সঙ্কটের জন্য কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রকের দিকেই আঙুল তুলে সংসদীয় কমিটির কাছে নালিশ জানাল রাজ্য। পাটের সর্বোচ্চ দাম কুইন্টাল প্রতি ৬৫০০ টাকায় বেঁধে দিয়ে জুট কমিশনারের অফিস যে ফতোয়া জারি করেছে রাজ্যের অভিযোগ তাকে ঘিরেই। রাজ্য সফরে আসা শ্রমমন্ত্রক সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সামনে বুধবার পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিয়ে বলা হয়েছে, জুট কমিশনারের ওই নির্দেশ প্রত্যাহার না হওয়ার ফলে চটকলগুলি পাট কিনতে পারছে না। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ পাট চাষিও বাড়তি দাম পাচ্ছে না। চাষিরা উৎপাদন কমিয়ে দিলে সঙ্কট তীব্র হবে বলেই কমিটিকে জানিয়ে দেন শ্রমদপ্তরের আধিকারিকরা।রাজ্যের বক্তব্য শুনে কমিটির চেয়ারম্যান ভর্তুহরি মহতাব বস্ত্রমন্ত্রকের কর্তাদের বলেছেন, কেন বিভিন্ন রাজ্যে পাটের উৎপাদন কমছে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার কাজের পরিধিও নতুন করে বিবেচনা করা যায় কি না তা জানাতে হবে রিপোর্টে। সেই রিপোর্ট সংসদীয় কমিটির কাছে জমা করতে হবে দ্রুত। তারপর কমিটি রিপোর্ট চূড়ান্ত করবে সংসদে পেশের জন্য। বৈঠকে উপস্থিত জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী অবশ্য দাম বেঁধে দেওয়া নিয়ে বিশেষ কিছুই বলতে চাননি।
সংসদীয় কমিটিকে রাজ্য জানিয়েছে, বাংলায় ৭০টি চটকলের মধ্যে পাটের অভাবে ১০টি বন্ধ, ২৬ হাজার শ্রমিক কর্মহীন। ছ’মাসের বেশি বন্ধ থাকা ৮টি চটকলের ৯ হাজার ১৫ জন শ্রমিককে রাজ্য মাসে দেড় হাজার টাকা করে ভাতা দিচ্ছে। শ্রমদপ্তর জানিয়েছে, রাজ্য কৃষিপণ্যের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেওয়ার পক্ষে নয়। পাটের সমস্যা নিয়ে তিনটি বৈঠক হয়েছে। সেখানেই মনোভাব স্পষ্ট জানানো হয়েছে কমিশনারকে। বলা হয়েছে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দিয়ে পাট কেনার কাজে জেসিআই-কে আবদ্ধ রাখলে চলবে না। গত ১০ বছরে মাত্র ২ শতাংশ পাট জেসিআই কিনেছে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে।
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন চলাকালীন সংসদীয় কমিটির কাছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নালিশ জানানোর বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, সর্বোচ্চ দাম তুলে দেওয়ার দাবি নিয়ে আগেই আইজেএমএ বস্ত্রমন্ত্রীর কাছে দরবার করলেও তিনি আমল দেননি। প্রধানমন্ত্রী অবগত থাকলেও সমাধান না বেরনোয় কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।