‘বিচারব্যবস্থা জ্ঞান দেবেন না’ আবু সালেম মামলায় মোদী সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের
সাজাপ্রাপ্ত গ্যাংস্টার আবু সালেমের দায়ের করা মামলার শুনানিতে কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। ‘বিচারব্যবস্থা জ্ঞান দেবেন না’ বলে মন্তব্য করেছে আদালত। পর্তুগাল থেকে প্রত্যর্পণের মাধ্যমে ভারতে আনা হয় ১৯৯৩ মুম্বই ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে অন্যতম অভিযুক্ত আবু সালেমকে। প্রত্যর্পণের সময় ভারত প্রতিশ্রুতি দেয়, আবু সালেমকে ২৫ বছরের বেশি কারারুদ্ধ করা হবে না। ২৫ বছরের প্রুতিশ্রুতি রক্ষা করা হবে না, এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল আবু সালেম। সেই নিয়ে সিবিআই জানিয়েছিল, ভারতের পর্তুগালকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি আদালতে খাটে না। সেই মন্তব্যে সন্তুষ্ট হয়নি সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই গত ২ ফেব্রুয়ারি আবু সালেমের করা মামলা নিয়ে কেন্দ্রের মতামত তলব করে সুপ্রিম কোর্ট।
১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বইতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ২৫৭ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন ৭০০-র বেশি মানুষ। এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আবু সালেমকে দেশে ফেরাতে তৎপরতা শুরু করে সরকার। অবশেষে ২০০২ সালের ১৭ ডিসেম্বর পর্তুগাল সরকারকে তৎকালীন উপ প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি প্রতিশ্রুতি দেন, সালেমের কারাবাসের মেয়াদ ২৫ বছর ছাড়াবে না। ২০০৫ সালে সালেমকে ভারতের হাতে প্রত্যর্পণ করে পর্তুগাল। ২০১৭ তে এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় সালেমের।
সালেমের করা মামলা নিয়ে শুনানি চলছে বিচারপতি এস কে কাউল এবং এম এম সুন্দ্রেশের এজলাসে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা সুপ্রিম কোর্টে জানান, পর্তুগালকে দেওয়া লালকৃষ্ণ আদবানির প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে বাধ্য সরকার। ২৫ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০৩০ সালে। আবু সালেমের আবেদন প্রসঙ্গে ভাল্লা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে না বলে সালেম যে দাবি করেছে, তা কল্পনাপ্রসূত এবং আগে থেকে তা ধরে নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের হলফনামায় জানানো হয়, ‘এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপযুক্ত সময় এটা নয়।’ এতে আরও বলা হয়, চাইলে আদালত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এরপরেই আদালত জানায়, কেন্দ্র কী ভাবছে তা জানাক। আদালতের কথায়, ‘আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে উপযুক্ত সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবের— মতো কথা শুনতে চাই না।’ বিরক্ত আদালত আরও জানায়, কখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তা জানানোর এক্তিয়ার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের নেই। আদালতের কথায়, ‘যে সিদ্ধান্ত আপনাদের নেওয়ার কথা, তা যখন আমাদের নিতে হচ্ছে, তখন এই নিয়ে জ্ঞান দেবেন না।’