বন্যার দুর্ভোগ কাটাতে বাঁধ নির্মাণ প্রায় শেষের পথে, উপকৃত হবে হাওড়া থেকে বর্ধমান
বন্যার দাপটে আর প্রভাবিত হবে না জনজীবন। চুঁচুড়া থেকে হুগলির উত্তরপাড়া, হাওড়া ও বর্ধমানের একটি অংশ, সেইসঙ্গে ধনেখালি, তারকেশ্বর ও জাঙ্গিপাড়া– এই বিস্তীর্ণ অঞ্চল দ্রুত বন্যাপ্রুফ হয়ে উঠতে চলেছে। রাজ্য সরকারের দূরদর্শিতায় কয়েক বছর আগে দামোদরের বামদিকের খাতে বাঁধ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। সেই কাজ প্রায় শেষের মুখে। সেচদপ্তরের দাবি, কাজ শেষ হয়ে গেলেই বন্যার ভ্রুকুটি মুছে যাবে হুগলির একটি বড় অংশ থেকে। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দামোদরের বন্যা রোখার যে বৃহৎ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তার প্রথমভাগের কাজ শেষ হতে চলেছে। ১৮৩ কোটি টাকার ওই মেগা প্রকল্পের কাজ মে মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।
প্রকল্পের অন্যতম তত্ত্বাবধায়ক হুগলি জেলা পরিষদ। পরিষদের সেচ কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, কোনও সন্দেহ নেই যে ‘বন্যা’ শব্দটি আর উচ্চারিত হবে না। হুগলির শহর ও গ্রাম মিলিয়ে একটি বড় অংশ, হাওড়া ও বর্ধমানের একাংশ বন্যাপ্রুফ হয়ে উঠতে চলেছে। খুব দ্রুতগতিতে দামোদরের বাম পাড়ে বাঁধ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। তা শেষ হওয়ার মুখে। একইসঙ্গে জেলার সেচব্যবস্থারও উন্নতি হবে। এই জেলার জন্য রাজ্য সরকারের ওই প্রকল্প আর্শীবাদের মতো। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, আমাদের সরকার দূরদর্শী। সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে। দামোদরের বাঁধ ও নানান নদীখাতের সংস্কারের ব্যয়বহুল প্রকল্প সেই পরিকল্পনার ফসল। এটা খুবই আনন্দের যে জাঙ্গিপাড়া সহ হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষকে বন্যা আর ভয় দেখাতে পারবে না।
২০১৯ সালের রাজ্য সরকারের নিজস্ব তহবিল এবং বিশ্বব্যাঙ্ক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের টাকায় দামোদরের বাঁধ দেওয়ার প্রকল্প অনুমোদন হয়। একইসঙ্গে ছিল একাধিক নদী, খাল সংস্কারের প্রকল্পও। ২৯০০ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে বর্ধমান থেকে হুগলি হয়ে হাওড়ার একটি অংশ পর্যন্ত এলাকা উপকৃত হবে। ২০২০ সালে সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তারই প্রথম পর্বের কাজের মধ্যে রাখা হয়েছিল দামোদরের বাম দিকের খাতে বাঁধ দেওয়ার কাজ। রণের খাল, লোয়ার হরিণাখলি খাল ও মুণ্ডেশ্বরীর কিছুটা সংস্কারের কাজও ওই পর্বে রাখা হয়। ওই কাজ মূলত, বর্ধমানের জামালপুর, হুগলির তারকেশ্বর, ধনেখালি ও জাঙ্গিপাড়ায় চলছে। মে মাসের মধ্যেই সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। এই পর্বেই প্রায় তিনশো পরিবারকে বাঁধ তৈরির জন্য ক্ষতিপূরণও দিয়েছে সরকার। এই বাঁধের কাজ শেষ হলেই ‘বন্যা’ শব্দটি আর উচ্চারিত হবে না হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।