কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

দিনের তুলনায় রাতে কলকাতায় শব্দদূষণ বেশি!

April 26, 2022 | 2 min read

ছবি সৌজন্যে: flicker

 রাতের কলকাতায় দিনের তুলনায় শব্দদূষণ বেশি। কোনও একটি নির্দিষ্ট জায়গা নয়। শহরের যেসব জায়গায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে শব্দদূষণ মাপার যন্ত্র বসানো আছে, সেখান থেকেই এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, পুলিস ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দক্ষ হতে পারে, কিন্তু শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের করা একটি মামলার শুনানি ছিল সোমবার। সেখানেই ট্রাইব্যুনাল এভাবে উষ্মা প্রকাশ করে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতায় বেশ কিছু জায়গায় দিনের তুলনায় রাতে শব্দ দূষণ বেশি। এমনকী, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অফিস এলাকায় দিনের বেলা শব্দের মাত্রা যেখানে ৭৩ ডেসিবেল,  রাতে তা ৯৪ ডেসিবেল। আরও দেখা গিয়েছে, আর জি কর বা এসএসকেএম হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা সাইলেন্স জোন হওয়া সত্ত্বেও শব্দদূষণ বেশি সেখানে। মামলাকারী ট্রাইব্যুনালকে আরও জানান, ২০০৪ সালে পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছিল, সাউন্ড লিমিটার ছাড়া মাইক বা বক্স বাজানো যাবে না। কিন্তু, ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও ওয়েবেল নির্মিত সেই লিমিটার বিক্রিই হয়নি। এ নিয়ে কোথাও কোনওরকম তৎপরতাও নেই। উৎসব, অনুষ্ঠানে তারস্বরে মাইক ইত্যাদি বাজানো হচ্ছে। সাইলেন্সর ছাড়া চলা মোটরবাইকের আওয়াজ নাগরিকের রাতের ঘুম কেড়ে নিলেও তা নিয়ে কেউ ভাবিত নয়। ট্রাইব্যুনাল এদিন নিজেই জানিয়েছে, পার্ক স্ট্রিটের মতো অভিজাত এলাকায় দু’টি হোটেল রাতে এতটাই শব্দদূষণ ঘটায় যে সেখানকার আবাসিক মানুষের ঘুম নষ্ট হয়।


প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিবেশ দপ্তরের একটি রিপোর্টে সারা বিশ্বের বেশ কিছু শহরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে, কলকাতা সহ ভারতের পাঁচটি শহরে শব্দমাত্রা সহনসীমা ছাড়িয়ে অনেকটাই বেশি রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ (১১৪ ডেসিবেল) দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ কবলিত। এছাড়া দেশের আরও চারটি শহরের শব্দমাত্রা উদ্বেগজনক বলে জানাচ্ছে ওই রিপোর্ট। সেগুলি হল দিল্লি (৮৩ ডেসিবেল), জয়পুর (৮৪ ডেসিবেল), কলকাতা ও আসানসোল (৮৯ ডেসিবেল)। ১৯৯৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঠিক করে দেওয়া মাপকাঠি অনুযায়ী, রাস্তাঘাট ও দোকানপাট, শিল্পাঞ্চলে শব্দের সর্বোচ্চ সহনসীমা ৭০ ডেসিবেল। আর জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই সীমা ৫৫ ডেসিবেল। 

এদিন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পুলিস প্রশাসনের ভূমিকার রীতিমতো সমালোচনা করে ট্রাইব্যুনাল। রাজ্যের ডিরেক্টর জেনারেল এবং ইনসপেক্টর জেনারেল অব পুলিস জানিয়েছেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণে ৮০০টি সাউন্ড লেভেল মিটার এবং সাউন্ড লেভেল ক্যালিব্রেটরস জেলাগুলিতে পাঠানো হয়েছিল। বেঞ্চের অভিমত, এই সামান্য সংখ্যক যন্ত্র দিয়ে শব্দদূষণের মাত্রা মাপা এবং সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তাছাড়া যন্ত্রগুলি ট্রাইব্যুনালের নির্দেশিত জায়গায় লাগানো হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে পুলিসি হলফনামায় কোনও উল্লেখ নেই। ট্রাইব্যুনাল বলেছিল, এই যন্ত্র উৎপাদক সংস্থাগুলিকে দিয়ে ‘নয়েজ কন্ট্রোল’ ব্যবস্থাযুক্ত সাউন্ড সিস্টেম বানানো যায় কি না, দেখা হোক। পুলিসের হলফনামায় তারও কোনও উল্লেখ নেই। কীভাবে এই দূষণের প্রতিকার সম্ভব, তা জানাতে বলা হয়েছে মামলাকারীকেই। ১০ মে মামলার পরবর্তী শুনানি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata, #night, #noise pollution

আরো দেখুন