দেশজুড়ে ঘৃণা আর হিংসার পরিবেশে ভীত প্রাক্তন আমলারা, চিঠি দিলেন মোদীকে
দেশ জুড়ে সংখ্যালঘুদের প্রতি বিদ্বেষ এবং অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ তৈরির প্রচেষ্টা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের একাংশ। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিজেদের আশঙ্কার কথা জানিয়ে খোলা চিঠি লিখেছেন তাঁরা। চিঠিতে সই করেছেন ১০৮ জন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস, আইএফএস এবং আইআরএস আধিকারিক।
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো খোলা চিঠিতে দিল্লি, অসম, গুজরাত, হরিয়ানা, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে সাম্প্রতিক অশান্তির প্রসঙ্গ তুলে তাঁরা লিখেছেন, ‘যা ঘটছে তা ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক নীতি এবং আইনের শাসনের পরিপন্থী। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের আধিপত্যবাদ ক্রমশ প্রতিষ্ঠিত পাচ্ছে।’ ঘটনাচক্রে, উল্লিখিত প্রতিটি রাজ্যই বিজেপি শাসিত। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লির পুলিশ মোদী সরকারেরই নিয়ন্ত্রণে।
এই পরিস্থিতিতে সমাজের সংখ্যালঘু ও দুর্বল মানুষদের নতুন করে জীবন ও স্বাধীনতার আশ্বাস দেওয়ার প্রয়োজন বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন ১০৮ জন অবসরপ্রাপ্ত আমলা। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে নিজেদের পোশাক, খাদ্যাভ্যাস এবং সংস্কৃতি বজায় রাখতে পারেন, সে জন্য অবিলম্বে সরকারি পদক্ষেপের পক্ষেও সওয়াল করেছেন তাঁরা। সেই সঙ্গেই আশাভঙ্গের কথা জানিয়ে চিঠিতে লিখেছেন, ‘ঘৃণা ও বিদ্বেষের এই আবহে সংখ্যালঘুদের মনে ভীতি আরও প্রবল হচ্ছে।’
মোদী সরকারের আমলে দেশের সংখ্যালঘু, দলিত, দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ঘৃণার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে পরিকল্পিত ভাবে তাঁদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে ওই খোলা চিঠিতে। তাঁদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার নিরিখে অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের দাবি, ‘সর্বোচ্চ স্তরের রাজনৈতিক অনুমোদন ছাড়া এমনটা ঘটা সম্ভব নয়।’ দিল্লির জহাঙ্গিরপুরীর সাম্প্রতিক ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে যে ভাবে কয়েক ঘণ্টা ধরে পে-লোডার দিয়ে নির্মাণ ভাঙা হয়েছে, তার পিছনে ‘সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক অভিসন্ধি’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
চিঠির শেষে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের আবহে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে সক্রিয় হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আমলারা।