লেবুর দাম আকাশছোঁয়া, তবুও পুরনো দামে লেবু চায়ের আবদার গ্রাহকদের
বাজারে একটা পাতিলেবুর দাম ১০ টাকার উপর। তাও কিছু মানুষ চায়ের দোকানে গিয়ে সেই চার‑পাঁচ টাকার লেবু চা খাওয়ার আবদার করছেন। একে তো চড়া রোদ। তার উপর এমন আবদার শুনে মেজাজ ঠিক রাখতে পারছেন না চা দোকানিরা। উল্টে তাঁরা দু’-চার কথা শুনিয়েও দিচ্ছেন এমন ক্রেতাদের। শহরে এমনিতেই পাতিলেবু অগ্নিমূল্য। তার প্রভাব এসে পড়েছে হেঁশেল থেকে সর্বত্র। ফলে অনেকেই নমো নমো করে একটি বা দু’টি পাতিলেবু কিনে বাড়ির পথে পা বাড়াচ্ছেন। পাতিলেবুর বদলে গন্ধরাজ কিংবা কাগজিলেবু কিনেও দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছেন কেউ কেউ।
সোমবার কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতারা লেবু চা চাইলেই দোকানির মুখচ্ছবি আর স্বাভাবিক থাকছে না। কিছু দেকানি মুখের উপরই বলে দিচ্ছেন, ‘লেবু চা হবে না!’ আবার কোনও কোনও দোকানি বিস্ময় মেশানো প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন, ‘৫ টাকায় লেবু চা!’ কিছু চা দোকানি অবশ্য লেবুরস ও মশলা মেশানো ‘লেবু চা’ বেচছেন ৭ কিংবা ৮ টাকায়।
কথা হচ্ছিল শ্যামপুকুরের রাজবল্লভপাড়ায় নন্দকিশোর শর্মা নামে এক বৃদ্ধ চা দোকানির সঙ্গে। পাতিলেবুর দাম চড়ে যাওয়া নিয়ে কথা উঠতেই তিনি বলেন,‘আগে লেবু চায়ের জন্য দৈনিক ২০‑২৫ পিস পাতিলেবু কিনতাম। কিন্তু দাম চড় চড় করে বাড়তেই চার-পাঁচটির বেশি কিনতে পারছি না। কিন্তু খদ্দেরদের আবদার, পুরনো দামেই, মানে চার-পাঁচ টাকাতেই লেবু চা খাওয়াতে হবে! কোথা থেকে দেব বলুন তো?’ আর বিশু দে নামে অন্য এক চা দোকানি বলেন, ‘দাম বেড়ে গেলেও পাতিলেবুই কিনছি। তবে আগের থেকে অনেক কম। কারণ কিছু খদ্দের যে শুধু লেবু চা-ই খান।’ রবীন্দ্র সরণি এলাকার চা বিক্রেতা স্বপন সামন্ত বলেন, ‘প্রতিটা জিনিসের দাম প্রতিদিন বাড়ছে। যা পরিস্থিতি, তাতে সমস্ত খরচ-খরচা বাদ দিয়ে লাভের মুখই দেখতে পাচ্ছি না। তার উপর কয়েকদিন যাবৎ প্রচণ্ড গরম পড়ায় দুধ চা বিক্রিও কমে গিয়েছে। অনেকই চাইছেন লিকার চা। লেবু চা-ও চাইছেন কেউ কেউ।’ সব মিলিয়ে ভরা গ্রীষ্মে পাতিলেবুর দাম যত বাড়ছে, ততই চোখে সর্ষে ফুল দেখছেন চা ব্যবসায়ী থেকে অনেকেই।