মাওবাদীর গতিবিধির প্রশ্নের উত্তরে সন্তুষ্ট নন মমতা, নিজেই যাবেন ঝাড়গ্রাম
মাওবাদী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ বার নিজেই ঝাড়গ্রাম সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যে মাওবাদী গতিবিধি নিয়ে সন্দেহ ক্রমশ দানা বাঁধছে প্রশাসনের অন্দরে। পুলিশের তৎপরতাও শুরু হয়েছে সম্প্রতি। বুধবারের প্রশাসনিক বৈঠকে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত এবং পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষের কাছে সরাসরি মাওবাদী-পোস্টার সম্পর্কে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা। জেলা প্রশাসনের উত্তর যে তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি, তা সঙ্গে সঙ্গেই স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ, সীমানা এলাকাগুলিতে বাড়তি নজরদারি রাখতে হবে। যোগাযোগ বাড়াতে হবে মানুষের সঙ্গে। আত্মসমর্পণকারী কোনও মাওবাদী সরকারি সুবিধা না পেলে, তাঁকে দ্রুত যুক্ত করতে হবে। বাড়াতে হবে গোয়েন্দা-তথ্যের জোগান।
ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের কাছে এ দিন মমতা জানতে চান, যে মাওবাদী পোস্টারগুলি পড়ছে, তা কতটা যথার্থ। উত্তরে জেলা প্রশাসন তাঁকে জানায়, ওই পোস্টারগুলি যে মাওবাদীরাই লাগাচ্ছে, তার স্পষ্ট প্রমাণ নেই। স্থানীয় স্তরেও এমন কোনও সমস্যা টের পাওয়া যাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এর নেপথ্যে বিরোধী দলের হাত থাকতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘একটা-দুটো তিনটে পোস্টার বিজেপি লাগিয়ে দিয়েছে। তোমরাই বা লোকালি কেন বলে দিচ্ছো না যে ঘটনাটা সত্য নয়? যদি ঝাড়খণ্ড থেকে কোনও মাওবাদী আসে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নাও।’’ পুলিশ সুপার জানিয়েছিলেন বেলপাহাড়ি সীমানা সিল করা হয়েছে এবং নাকা চেকিং চলছে। মুখ্যমন্ত্রী যে তাতে সন্তুষ্ট হননি, তা সরাসরি বুঝিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘আমার কাছে তো খবর আছে, বেলপাহাড়ির বর্ডার দিয়ে কেউ কেউ ঝাড়খণ্ড থেকে ঢুকছে। কেউ কেউ তাদের মদত দিচ্ছে। … আমার কাছে খবর আছে। ডিজিকে পাঠিয়ে ছিলাম।’’ ডিজি মনোজ মালবীয়কে তারপরই তিনি প্রশ্ন করেন, কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে? ডিজি বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জনের গতিবিধি লক্ষ করা হচ্ছে।”
মমতার বক্তব্য, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের সহায়তায় প্রকল্প চালাচ্ছে সরকার। তাতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার প্রাক্তন মাওবাদীকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে। কেউ এমন সুবিধা না পেয়ে ফের মাওবাদী কার্যকলাপে সক্রিয় হচ্ছে কি না, এ দিন সেই প্রশ্নও তিনি তোলেন। রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তাঁর নির্দেশ, এমন ঘটে থাকলে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে। মমতার কথায়, “ঝাড়গ্রাম যাব। কবে যাব, পরে বলে দেব।”