নন্দনে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে মানুষের ভিড় মনে করাচ্ছে অষ্টমীর রাত
দুপুর দু’টোর টালিগঞ্জের চলচ্চিত্র শতবর্ষ ভবন দেখলে একটা কথাই মনে হয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সার্থক বিকেন্দ্রীকরণ করতে পেরেছে। অমর্ত্য ভট্টাচার্যর ‘অ্যাডিউ গোদার’ ছবিটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহ কানায় কানায় পূর্ণ। ছবি শুরু হতে খানিক দেরি হল ঠিকই, কিন্তু ছবির পরিচালক ও কলাকুশলীদের উপস্থিতি প্রশান্তি দেয়। আগামী ৬ মে থেকে এই প্রেক্ষাগৃহে বাণিজ্যিকভাবেও সিনেমা দেখানো শুরু হবে।
প্রায় একই চিত্র নন্দন চত্বরেও। আবার সেই পুরনো চলচ্চিত্র উৎসব যেন ফিরে এল। আসনের অভাবে দর্শকরা সিঁড়িতে বসেও ছবি দেখলেন। ফেস্টিভ্যালের চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘আমরা নন্দন চত্বরে মাইক বাজাতে পারছি না। সিনে আড্ডা এবার একতারা মঞ্চে করতে পারছি না। কিন্তু তাও দর্শক যেভাবে আসছেন, ছবি দেখছেন তাতে আমরা অভিভূত।’ রাজের এই কথার প্রমাণ পাওয়া যায় ডেইলি পাসের কাউন্টারের লাইন দেখে। তবে জনপ্রিয় সিনে আড্ডা থমকে যায়নি। বাংলা অ্যাকাডেমি সভাঘরে এদিনের সিনে আড্ডার আলোচনার বিষয় ছিল ‘সিনেমায় কমেডি কি শুধুই হ য ব র ল?’ অংশ নিয়েছিলেন অম্বরীশ ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, বিশ্বনাথ বসু ও রজতাভ দত্ত। আড্ডার সঞ্চালনা করেছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত।
অন্যদিকে কলকাতা তথ্যকেন্দ্রে এদিনের আলোচনার বিষয় ছিল, মহামারী পরবর্তী সময়ে ছবি দেখা এবং দেখানোর ক্ষেত্রে কতটা পরিবর্তন এসেছে। সেমিনারে অংশ নেন রাজ চক্রবর্তী, প্রেমেন্দুবিকাশ চাকী, বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায় ও সোহিনী দাশগুপ্ত। সকলেই মহামারীর সময় এবং তার পরবর্তীকালে কীভাবে ফিল্ম মেকিং বদলে গিয়েছে, সেই বিষয় তুলে ধরেন।
চলচ্চিত্র উৎসবে এবারে বহু আঞ্চলিক ভাষার ছবি দেখানো হচ্ছে। সাঁওতালি ভাষার ছবি ‘আশা’র পরিচালক পল্লব রায় ও রাজবংশী ভাষার ‘বিহান’ ছবির পরিচালক সৌরভ গুহ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের দুই বিধায়ক বীরবাহা হাসদা ও মনরঞ্জন ব্যাপারী। উৎসবের অষ্টমীতে নন্দনকে কিন্তু একডালিয়া কিংবা সিংহী পার্কের দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর সন্ধ্যার সঙ্গে তুলনা করাই যায়।