আগামী কয়েক বছরে ভারতে অতিমারির সংখ্যা মারাত্মক পরিমাণে বাড়বে, আশঙ্কায় বিজ্ঞানীরা
আগামী কয়েকটি বছরের মধ্যেই পৃথিবীতে বহু নতুন ধরনের জীবাণুর সংক্রমণ শুরু হয়ে যাবে। এর মধ্যে অনেকগুলিই অতিমারির চেহারা নিতে পারে। অনেকগুলিই পারে মানুষকে চরম বিপের মুখে ফেলতে। এবং এদিকে এগোন শুরু হয়ে গিয়েছে। এমনই বলছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া এক প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে পৃথিবী প্রায় ১৫০০ অতিমারির মুখোমুখি হতে পারে। এর আতুঁড়ঘর হয়ে উঠতে পারে ভারত। ভারত ছাড়া আরও একটি দেশ ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়তে পারে, সেটি হল ইন্দোনেশিয়া।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর পিছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নেবে বিশ্ব উষ্ণায়ণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন। এছাড়া মারাত্মক ভূমিকা নিতে পারে জনঘনত্বের বাড়বাড়ন্তও।
এই গবেষণাপত্রটিতে মূলত ৫টি বিষয় নিয়ে বলা হয়েছে। দেখে নেওয়া যাক, সেগুলি কী কী।
- গরম যত বাড়বে, বিভিন্ন প্রাণী তাদের পুরনো বাসস্থান ছেড়ে আরও শীতল পরিবেশের দিকে যাত্রা করবে। তাতে তারা নতুন বিভিন্ন প্রাণীর সামনাসামনি হবে। তাতে বাড়বে এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীর শরীরের জীবাণুর যাতায়াত। আর তাতেই হবে মিউটেশন। জন্ম নেবে নতুন জীবাণু। তার অনেকগুলিই অতিমারি সৃষ্টি করতে পারে।
- করোনাকালে বোঝা গিয়েছে Zoonotic Studies-এর গুরুত্ব বেড়েছে। এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীর শরীরে জীবাণুর যাতায়াত, মিউটেশন এবং নতুন অতিমারির সৃষ্টির কার্যকারণ ব্যাখ্যা করতে পারে এই বিজ্ঞান। আগামী সময়ে এই বিজ্ঞানই বলে দেবে মানুষ এবং বিভিন্ন প্রাণীর ক্ষতির আশঙ্কা কতটা বাড়ছে।
- বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে জীবাণুর যাতায়াত সবচেয়ে বেশি মাত্রায় হবে এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। কারণ এই সব দেশের জনঘনত্ব এবং জনসংখ্যা অন্য মহাদেশের দেশগুলির তুলনায় বেশি। বিশেষ করে ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার কথা বলা হয়েছে এই রিপোর্টে।
- এই ঘটনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের মত, এখন কার্বন এমিশন কমিয়ে বা বিশ্ব উষ্ণায়নকে ঠেকিয়ে দিলেও এই প্রক্রিয়ার গতি কমবে। একে আর আটকানো যাবে না।
- বাদুড়ের মতো প্রাণী ইতিমধ্যেই এই জাতীয় জীবাণু ভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে। গরম যত বাড়বে বাদুড়ের কারণেই প্রচপর জীবাণু এক জায়গা থেকে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়বে।
সব মিলিয়ে আগামী সময়টি যে খুব সুখকর হতে চলেছে— এমন আশার কথা বলছেন না বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, আগামী সময়ে মারাত্মক বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে মানুষ-সহ গোটা প্রাণীকুলের জন্য। এবং সেই বিপদ থেকে আর বাঁচা সম্ভব নয়।