তৃণমূলের সংগঠন ওয়েবকুপার সদস্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত? তথ্য পেশ হতে চাঞ্চল্য
যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দু’বেলা প্রচার, সেই দলের গণ সংগঠনের সদস্য! আর কেউ নন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি অধ্যাপক সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
সোমবার তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সমিতি (ওয়েবকুপা) এই তথ্য সামনে এনেছে।
সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অধ্যাপক কৃষ্ণকলি বসু সুকান্তবাবুর সদস্যপদের প্রমাণপত্র সংবাদমাধ্যমে পেশ করেছেন। তাঁর কথায়, “২০১৩ সাল থেকে সুকান্ত মজুমদার আমাদের সংগঠনের সদস্য। তিনি আমাদের সংগঠনে আসার জন্য লিখিত আবেদন করেছিলেন। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের আহ্বায়কের সুপারিশে তাঁর সদস্যপদ মঞ্জুর করি। পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হলেও এখনও তিনি ওয়েবকুপায় ইস্তফা দিয়েছেন এমন কোনও তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।”
গৌড়বঙ্গে উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ে অধ্যাপনা করেন সুকান্তবাবু। তিনি ২০১৯ সালে বিজেপির টিকিটে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কেন্দ্র থেকে সাংসদ হন। গত বছর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সুকান্তবাবুকে সভাপতি করে। তারপর থেকে দু’জনের সম্পর্ক শীতল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপি নেতারা এই খবরে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) সামনে রেখে যখন দল গোটা দেশে প্রচার করছিল তখন তাঁর বিরুদ্ধে পালটা প্রচার করছিল সুকান্তবাবুর সংগঠন।
বস্তুত, রাজ্যে পালা বদলের পর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রাস্তায় নেমে বিজেপি বিরোধিতা করছে ওয়েবকুপা। অধ্যাপক বসু দাবি করেছেন, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি প্রতিমাসেই আমাদের চাঁদা দিতেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সঙ্গী করে গৌড়বঙ্গে যে ইউনিট হয় তার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন সুকান্তবাবু।” বলাই বাহুল্য এই তথ্য বিজেপির (BJP) কাছে ছিল না। কেন তিনি তৃণমূলে সংগঠনে সক্রিয় থাকার কথা গোপন করেছেন তা এখন জানতে চান বিজেপি নেতা–কর্মীরা। সুকান্তবাবুর বক্তব্য জানতে সংবাদ প্রতিদিনের তরফে বারবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এমনকী এসএমএসেরও জবাব দেননি।
তাহলে কি ভবিষ্যতে ফের তৃণমূল সংগঠনে ফিরতে চান বিজেপির রাজ্য সভাপতি? উত্তর মেলেনি। ওয়েবকুপা সভাপতি বলেন, “বিজেপির ফাঁদে পা দিয়ে অনেকে সেখানে ভিড়েছিলেন। কিন্তু ভগ্নমনোরথ হয়ে এখন অনেকেই ফিরে আসতে দরবার করছেন। বকেয়া চাঁদা মিটিয়ে মিটিয়ে দিয়ে অনেকে সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করছেন। ভবিষ্যতে সুকান্তবাবু ফিরতে চাইলে আমি দলের উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব। সবকিছু নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”