স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাংলা, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪
লাগাতার কড়া বিধিনিষেধের সুফল হিসেবে রাজ্যে করোনা সংক্রমণে লাগাম টানা গিয়েছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাংলা। তবে মঙ্গলবার রাজ্যের কোভিড (COVID-19) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সামান্য বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। যদিও মৃতের সংখ্যা শূন্য। বিশেষজ্ঞদের খানিকটা চিন্তায় রাখছে রাজ্যের ঊর্ধ্বমুখী অ্যাকটিভ কেস। তাঁদের পরামর্শ, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক তেমন না হলেও সারা বছর ধরেই সতর্ক থাকতে হবে।
মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে (Coronavirus) আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ জন। সোমবার যা ছিল ২৭। করোনার দৈনিক পজিটিভিটি রেট কমেছে সামান্য। এই মুহূর্তে তা ০.৪২ শতাংশ। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনা পজিটিভ হয়েছেন ২০ লক্ষ ১৮ হাজার ৩৭৪ জন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৯৯ শতাংশই করোনা মুক্ত হয়ে গিয়েছেন। স্বাস্থ্যদপ্তরের বলছে, একদিনে রাজ্যে কোভিড থেকে সুস্থ হয়েছেন ২৭ জন। এখনও পর্যন্ত বাংলার ১৯ লক্ষ ৯৬ হাজার ৭৬০ জন মহামারীর কবল থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সুস্থতার হার এনিয়ে ৯৮.৯৩ শতাংশ।
মহামারীর বিরুদ্ধে লডা়ই জোরদার করতে টিকাকরণও চলছে জোরকদমে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার টিকা নিয়েছেন ১,১৪,৩৫৮ জন। সোমবারই সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, নাগরিকদের করোনা টিকা (Corona Vaccine) নিতে বাধ্য করা যাবে না। তবে কেন্দ্রের বর্তমান টিকা-নীতি যে অযৌক্তিক নয়, তাও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। এদিকে, সাবধানের মার নেই। তাই করোনা থেকে সারাবছর সতর্ক থাকতে হবে। বলছেন বিশেষজ্ঞরা। অত্যন্ত ধীর গতিতে হলেও ক্রমশ রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় ছড়াচ্ছে করোনা। অন্তত স্বাস্থ্যভবনের সমীক্ষা থেকে এমনটাই বলছে।
বিগত তিনবছরের মতো কলকাতা ও উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রোগীর সংখ্যা ছিল লাগামছাড়া। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে কলকাতাকে পিছনে ফেলে অনেকটাই এগিয়ে আছে বীরভূমের লাভপুর বা পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর, নিউটাউন, বিধাননগর এলাকা। এইসব এলাকাকে পিঙ্ক বা গোলাপি জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে স্বাস্থ্যভবনের সমীক্ষায়। গত একমাসে এইসব এলাকায় গড়ে ১০–১২টি করে কোভিড রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে। এটা যেমন একটা দিক, তেমনই রাজ্যের সব পুরসভা ও ব্লকগুলিতেও সমীক্ষা চালিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
কলকাতা বাদে রাজ্যের প্রায় সব পুর এলাকাকে গ্রিন জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ কোভিড রোগী নেই বললেই চলে। এইসব এলাকায় গড়ে মাসে ২–৪টি করে কোভিড রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে এখনই যে কোভিড খুব বেড়ে চলেছে, তা কিন্তু নয়। তবে যে জায়গাগুলিতে এখনও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, দেখা যাচ্ছে সেখানে আরও কড়া নজরদারি করতে হবে। এই ধরনের রুটিন নজরদারি থেকে কিন্তু ভবিষ্যতের পরিস্থিতি আঁচ করা যায়।”