এবার এক ছাতার তলায় মিলবে হার্ট, স্নায়ু, রক্তের অসুখের পরিষেবা! কলকাতায় তৈরি হচ্ছে উৎকর্ষ কেন্দ্র
দিন দিন বেড়ে চলা রোগীর চাপ। রেফারের সমস্যা। সবকিছু মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমানায় বাংলায় এই প্রথম তৈরি হচ্ছে তিনটি রোগের প্রথম সারির সরকারি উৎকর্ষ কেন্দ্র বা সেন্টার অব এক্সেলেন্স। একটি হল হার্টের অসুখ, দ্বিতীয়টি স্নায়ুরোগের সমস্যা এবং তৃতীয়টি রক্তের অসুখ ও ইমিউনোলজি। এর মধ্যে হার্ট ও রক্তের অসুখের কোনও স্বয়ংসম্পূর্ণ সরকারি হাসপাতাল নেই বাংলায়। কনভেন্ট রোডে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে হতে চলেছে এই তিনটি হাসপাতাল। স্বাস্থ্যদপ্তরের একাধিক শীর্ষ সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে হার্টের অসুখ বিশেষত হার্ট সার্জারির পরিকাঠামোর আরও উন্নতিতে মুখ্যমন্ত্রী বিশিষ্ট হার্ট সার্জেন ডাঃ প্লাবন মুখোপাধ্যায়কে বিশেষ দায়িত্ব দেন। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের হার্ট সার্জারি বিভাগের কোথায়, কী সমস্যা রয়েছে, প্লাবনবাবু তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কীভাবে বিভাগগুলির ‘অসুখ’ সারানো যায়, সরকারকে তার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেন। সেইসব প্রস্তাব মাথায় রেখে হার্টের হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলায় বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (বিআইএন) ছাড়া সরকারি ক্ষেত্রে স্নায়ুরোগ চিকিৎসার উৎকর্ষ কেন্দ্র নেই। এদিকে নিউরো রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্যইঙ্গিতের মাধ্যমে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা হলেও, স্নায়ুরোগ চিকিৎসার পরিকাঠামো দ্রুত বাড়ানো জরুরি। সরকারও তাই চাইছে আরও একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ নিউরো হাসপাতাল।
ঘরে ঘরে এখন ক্যান্সার। এমন দিন বেশি দূরে নেই, যখন হয়তো পরিবার পিছু ন্যূনতম একজন কর্কটরোগে আক্রান্ত হবে। মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা চলছে জোর কদমে। কিন্তু, সুনির্দিষ্টভাবে রক্তের অসুখ ও ইমিউনোলজি নিয়ে পৃথক কোনও সরকারি ইনস্টিটিউট রাজ্যে নেই। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং এন আর এসের হেমাটোলজি ইনস্টিটিউট রাজ্য তথা দেশে সুনাম কুড়িয়েছে ঠিকই, কিন্তু দুই বিভাগই রোগীর চাপে কাহিল। স্বয়ংসম্পূর্ণ ইনস্টিটিউটের চাহিদা রয়েছে তাই এক্ষেত্রেও। পাশাপাশি ইমিউনোলজি সারা পৃথিবীতে এখন ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় চিকিৎসাশাস্ত্র বলে পরিচিত।
হার্ট সার্জারি সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলার উপদেষ্টা প্লাবনবাবু বলেন, একই ছাতার তলায় হার্টের সমস্ত রোগের চিকিৎসা ও অপারেশনের একটি আধুনিক ইনস্টিটিউট গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা। বাকিটা দেখা যাক। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, পরিকল্পনা রয়েছে। এখনও বিস্তারিত বলব না।
কিন্তু, ইনস্টিটিউট হলেই হল না, কতগুলি প্রশ্নও আছে? এক, সেক্ষেত্রে কারা এইসব রোগের উৎকর্ষ কেন্দ্রে ভর্তি হবেন? যে কেউ এলেই, নাকি বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ বা জেলা থেকে রেফার্ড রোগীরা? দ্বিতীয়ত, ইনস্টিটিউট থাকবে আবার কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে এই তিন বিভাগও থাকবে? কারণ, না রাখলে যে আবার স্বাস্থ্যশিক্ষার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনএমসি কলেজগুলির অনুমোদনই বাতিল করে দেবে! সেক্ষেত্রে কী করণীয়? দপ্তরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, প্রশ্নগুলির সমাধানসূত্র খুঁজছি আমরাও।