আজ থেকে শুরু এলআইসির শেয়ার বিক্রি, অমুক কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ বিরোধীদের
মোদী সরকারের সিদ্ধান্ত মতো আজ থেকে এলআইসি’র শেয়ার বিক্রি শুরু হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের সঞ্চয় নিয়ে কেন ছিনিমিনি? কেনই বা জনগণের কোনও মতামত নেওয়া হল না? সরকারি বিমা সংস্থাটি যখন বছর বছর কেন্দ্রকে বিপুল লভ্যাংশ তুলে দেয়, তখন কেনই বা তার শেয়ার বিক্রি হচ্ছে? আর হলেও বা কেন কম দামে? এমনই একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে সমালোচনায় সরব হল কেন্দ্রের বিরোধী দল কংগ্রেস ও তৃণমূল।
১৯৫৬ সালে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর সময়ে সংসদে আইন পাশ করে তৈরি হয়েছিল এলআইসি। পরে যা ভারতের সবচেয়ে বড় বিমা কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদেশি বিমা কোম্পানির সঙ্গেও টক্কর দিয়ে আসছে এই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আজ বুধবার থেকে তার শেয়ার বাজারে বিক্রি করা শুরু করছে মোদি সরকার। বিরোধীদের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই মানুষের কষ্টার্জিত সঞ্চয় নিয়ে জুয়া খেলতে নামা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে তৃণমূলের মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, নরেন্দ্র মোদী দেশ চালাতে আসেননি। নাগরিকদের সহায়তায় তিল তিল করে গড়ে ওঠা দেশের সম্পদ বিক্রি করতে ক্ষমতায় বসেছেন। বিজেপি কি নির্বাচনী ইস্তাহারে এভাবে সম্পদ বিক্রির কথা জানিয়েছিল? জানায়নি। তাহলে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এসেছেন, তা পূরণ না করে কেন এলআইসি’র মতো সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে গলা টিপে মারতে চাইছেন? তবে কি বন্ধু ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেখছেন মোদীজি? সুখেন্দুবাবুর সওয়াল, এলআইসি’কে শেয়ার বাজারে খাটিয়ে তোলা অর্থ যে সংস্থার উন্নয়নে খরচ করা হবে, তার গ্যারান্টি কোথায়? শেয়ার বিক্রির অর্থ যে শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের সেন্ট্রাল ভিস্তার জন্য খরচ হবে না, তা কি নিশ্চিত করে বলতে পারবে মোদি সরকার?
একইভাবে তোপ দেগেছেন কংগ্রেসের মুখ্য মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাও। তাঁর মতে, মোদী সরকারের এই স্বেচ্ছাচারি সিদ্ধান্তে কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হতে চলেছে। ৩০ কোটি পলিসি হোল্ডারের পাশাপাশি সংস্থার সঙ্গে জড়িত ১৪ লক্ষ মানুষের (এজেন্ট এবং এলআইসি’র কর্মী) ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ফেব্রুয়ারি মাসে এলআইসির ভ্যালুয়েশন ধরা হয়েছিল ১২ থেকে ১৪ লক্ষ কোটি টাকা। তাহলে এখন শেয়ার বাজারে আইপিও (ইনিশিয়াল পাবলিক অফার) শুরু করতে গিয়ে কেন তা ৬ লক্ষ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হল? কেন এই অবমূল্যায়ন? জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতি শেয়ার প্রাইস ১১০০ টাকা ঠিক করা হলেও এখন কেন তা কমিয়ে করা হল ৯০২ থেকে ৯৪৯ টাকা? এতে কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হবে বলেই মন্তব্য করেছেন সুরজেওয়ালা। এলআইসি কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।