সিলেবাস বদলের আগে ১৩০০ স্কুলে হবে সমীক্ষা, পড়ুয়া, শিক্ষকের মত নেবে শিক্ষা দপ্তর
এক দশক পর রাজ্যের স্কুল শিক্ষার সিলেবাস (Syllabus) বদলের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার। তবে চলতি সিলেবাসে বদল আনার আগে পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মতামত নেবে বিকাশ ভবন।
শুক্রবার বিকেলে রাজ্যের নতুন সিলেবাস কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, চলতি সিলেবাস ফের পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। পঠনপাঠনকে আরও জীবনমুখী করা দরকার। যাতে সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞানের পাশাপাশি ছেলেমেয়েরা ক্লাস রুম থেকেই জীবনের বাকি পথ চলার ধারনা তৈরি করে নিতে পারে।
কিন্তু শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সে কাজ করা হবে না। ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকমণ্ডলীর মতামত নেওয়া হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বসতে চলেছে রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতি তৈরির জন্য গঠিত কমিটির বৈঠকও। রাজ্যের বিকল্প শিক্ষানীতি তৈরির জন্য গঠিত ১০ সদস্যের ওই কমিটির প্রধান কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজ্যে ৬০টি বই সিলেবাসে আছে। এই সব ক’টি বই কুরিয়ার করে তাঁকে আগেই পাঠানো হয়েছে। আমেরিকা থেকে বৈঠকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেবেন তিনি।
রাজ্যে স্কুল শিক্ষায় সিলেবাস বদলের কাজ শুরু হয়েছিল বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার কিছুদিন পর থেকে। দফায় দফায় বিভিন্ন ক্লাসের সিলেবাসের পরিবর্তন করা হয়। যেমন সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন-সহ বেশ কিছু গণ-আন্দোলন সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
রাজ্য সরকার আবার দেখে নিতে চাইছে চলতি সিলেবাস কতটা সময়োপযোগী। তাছাড়া এখন সিলেবাস পর্যালোচনার আরও একটি কারণ কেন্দ্রের শিক্ষানীতি। দিল্লির অনেক সুপারিশের সঙ্গে রাজ্য একমত নয়। দেশের চলতি রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতেও সিলেবাসের সময়োপযোগী পরিবর্তন জরুরি বলে সরকারি শিক্ষা মহল মনে করছে। বিশেষ করে সিলেবাসে কীভাবে কর্মসংস্থানমুখী করে তোলা যায় সেই ভাবনাও রয়েছে।
স্পিভাক দেশে থাকাকালে রাজ্যের প্রান্তিক মানুষের মধ্যে কাজ করেছেন। তাঁদের ভাষায় তাঁদের সমস্যা বুঝতে চেয়েছেন। ‘ক্যান দ্য সাবঅল্টার্ন স্পিক’- এর লেখিকা গায়ত্রী সিলেবাসকে জীবনমুখী করার কাজে সঠিক দিশা দিতে পারবেন বলে মনে করছে শিক্ষামহল।
এদিন সিলেবাস কমিটির বৈঠক শেষে চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানান, কমিটির পরবর্তী বৈঠক হবে ২ জুন। তার আগে ক্লাস ধরে সমীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির কাজ শেষ করে ফেলা হবে। যাতে গরমের ছুটি শেষে স্কুল খোলা মাত্র সমীক্ষার কাজ শুরু করে দেওয়া যায়।