বাঁশবেড়িয়ায় হিন্দিভাষীদের বাংলা শেখানোর পাঠ, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখলেন তৃণমূল কাউন্সিলর
পুরভোটের প্রচারের সময় এলাকাবাসীর অনেকেই তাঁকে জানিয়েছিলেন, বাংলায় থাকলেও আয়ত্তে আসেনি এ ভাষা। বরং উর্দু বা ফারসিতেই দড় তাঁরা। তাঁর কাছে বাংলা শেখানোর বন্দোবস্ত করার আর্জিও জানিয়েছিলেন অনেকে। ভোটপ্রচারে সেই দাবিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মহম্মদ শাহিদ। ভোটে জেতার পর সে কথা রেখেছেন বাঁশবেড়িয়া পুরসভার এই তৃণমূল কাউন্সিলর।
বাঁশবেড়িয়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কলবাজার এলাকায় মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজনের বসবাস। উর্দু অথবা হিন্দিতেই কথা বলেন তাঁরা। এলাকার মাদ্রাসায় শেখানো হয় উর্দু এবং ফারসি। ফলে এ রাজ্যের বাসিন্দা হলেও বাংলায় একেবারেই সড়গড় নন তাঁরা। তবে এ বার সে দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন এই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মহম্মদ শাহিদ। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের সময় বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়ে মানুষের বিভিন্ন চাহিদার কথা শুনেছিলাম। পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা বা রাস্তার বেহাল দশা ঠিকঠাক করা— এ সব দাবির পাশাপাশি ছিল বাংলা শেখার চাহিদাও। তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, ভোটে জিতে কাউন্সিলর হলে এলাকার বাসিন্দাদের বাংলা শেখানোর বন্দোবস্ত করা হবে।’’
প্রতিশ্রুতি রেখেছেন শাহিদ। শনিবার থেকে তাঁর উদ্যোগে এলাকায় শুরু হয়েছে বিনামূল্যে বাংলা ভাষা শেখানোর কোচিং ক্লাস। এই কোচিং ক্লাসে এলাকার আট থেকে আশি সকলেই বাংলা ভাষা শিখতে পারবেন। প্রতি শনি ও রবিবার ভাগ করে তিন ঘণ্টা ধরে চলবে ক্লাস। কোচিংয়ে বাংলা লেখা ও পড়ানো হবে। এই উদ্যোগে খুশি কোচিং ক্লাসে বাংলা শিখতে আসা এলাকার যুবতী হাসমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় থাকি। অথচ আমরা বাংলা বলতে বা লিখতে পারি না। তাই অনেক সময় অসুবিধে হয়। ফলে এই ভাষা জানাটা খুবই জরুরি। কোচিং ক্লাসে খুব মনোযোগ দিয়ে বাংলা শিখব। আমার মতো এলাকার অনেকেই এতে উৎসাহ পাচ্ছেন। খুব মজা করেই বাংলা শিখছি।’’
এলাকাবাসীর সাড়া পেয়ে যারপরনাই ‘তৃপ্ত’ কাউন্সিলর। তিনি বলেন, ‘‘আপাতত ২৫৭ জন বাসিন্দা এই কোচিং ক্লাসে নাম লিখিয়েছেন। তাঁদের সহজ পাঠ-সহ বাংলা বর্ণপরিচয় দেওয়া হয়েছে। বিনা পয়সায় এই কোচিংয়ে বাংলা শেখানো হবে।’’