রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

শংসাপত্রের বদান্যতায় ভিনরাজ্যের ২০০-র বেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়ে গেলেন বাংলার মেডিক্যাল আসনে!

May 8, 2022 | 2 min read

খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন বাংলায় উঠে যাক ‘ডোমিসাইল বি’ ফর্মের মাধ্যমে ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের মেডিক্যাল শিক্ষায় ভর্তি। তা সত্ত্বেও এই বছর উত্তরপ্রদেশ, বিহার সহ ভিন রাজ্যের ২০০-র বেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়ে গেলেন বাংলার মেডিক্যাল আসনে। সৌজন্যে সেই ‘ডোমিসাইল বি’ শংসাপত্র। 

স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত মেডিক্যালের মোট আসনের আনুমানিক ৬ শতাংশ আসনে এই শংসাপত্রের বদান্যতায় ভিন রাজ্যের ছেলেমেয়েরা এমবিবিএস-এ ভর্তি হয়ে গিয়েছেন। এ ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ নিট পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সংগঠন। ক্ষুব্ধ প্রস্তুতিতে যুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ‘বাংলা পক্ষ’-এর মতো বাংলাপ্রেমী সংগঠনও। কমবেশি প্রত্যেকের সাফ কথা, ‘ডোমিসাইল বি চালু রাখাই বেআইনি।’ শিক্ষক ডাঃ এ কে মাইতি বলেন, ‘একজন ছাত্র এক সঙ্গে দুটি রাজ্যে মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ পান কীভাবে? মেধার জোর থাকলে তিনি ১৫ শতাংশ সর্বভারতীয় সংরক্ষণের সুবিধা নিয়ে যে কোনও রাজ্যে ভর্তি হতে পারেন।’ 

প্রসঙ্গত, বাংলা ছাড়া দেশের প্রায় সব রাজ্যই ‘ডোমিসাইল বি’ ফর্ম-এর মাধ্যমে মেডিক্যালে ভর্তি বন্ধ করেছে। নতুবা এমন কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে, যার ফাঁক গলে ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের মেডিক্যালে ভর্তি কার্যত অসম্ভব। এনিয়ে সে সব রাজ্যে উচ্চ আদালতে মামলা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে এভাবে ভর্তি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিছু রাজ্য এও নিয়ম করেছে, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক সমতুল্য পড়াশোনা সেখান থেকে করলে তবেই শংসাপত্র মিলবে। সে নিয়ম পার করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে। 

বাংলায় মেডিক্যাল কোর্সে ভর্তিতে ডোমিসাইল বি সংরক্ষণ পাওয়ার একাধিক নিয়ম রয়েছে। সেগুলি হল—১) বাংলায় ওইসব ছাত্রছাত্রীদের স্থায়ী ঠিকানা থাকতে হবে। ২) টানা ১০ বছর এখানকার বাসিন্দা হতে হবে। অভিভাবকদের সংগঠনের তরফে অশোককুমার সুর বলেন, বাঁকা পথে এই দুই নিয়ম মানা এখানে জলভাত ব্যাপার। ১০ বছর টানা এখানে ভাড়া নিয়ে আছেন—এমন নথি ঘুরপথে জোগাড় করা খুব কষ্টের নয়। বাংলা পক্ষের কৌশিক মাইতি বলেন, ব্যাপক দুর্নীতি চলেছে ডোমিসাইল বি নিয়ে। স্থানীয় কাউন্সিলারের কাছ থেকে এখানে থাকার প্রমাণপত্র লিখিয়ে সেই কাগজ মহকুমা শাসক বা তদুর্ধ্ব আধিকারিকের কাছে জমা দিচ্ছে ভিন রাজ্যের ছেলেমেয়েরা। ব্যস্ততার মধ্যে অফিসারদের পক্ষে জনে জনে ঠিক-ভুল বিচার করা কার্যত অসম্ভব। ফলে সেই পড়ুয়ারা অনায়াসে পেয়ে যাচ্ছে ডোমিসাইল বি সার্টিফিকেট। এ ধরনের দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। স্বাস্থ্যভবনের স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার এক পদস্থ আধিকারিকের প্রতিশ্রুতি, স্বাস্থ্য ও উচ্চশিক্ষা দপ্তর যৌথভাবে এ নিয়ে শীঘ্রই বৈঠক করবে। এনিয়ে এবার একটা হেস্তনেস্ত করা হবে। পরবর্তী নিট থেকে আর ডোমিসাইল বি থাকবে না—আশ্বাস তাঁর।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Medical, #medical students

আরো দেখুন