বুড়ো আঙুল ‘অশনি’ সঙ্কেতকে, দীঘায় ভিড় পর্যটকদের, হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন
চোখরাঙানি রয়েছে ‘অশনি’-র। আম্পান, যশের অভিজ্ঞতার পর তাই আরও সতর্ক প্রশাসন। কিন্তু সেই সতর্কতাই উপেক্ষ করে সৈকত শহরে উপচে পড়ছে পর্যটকদের বুধ-বৃহস্পতি থেকে শুরু হয়ে যা অব্যাহত রবিবাসরীয় ছুটির দিনেও। যদিও ইতিমধ্যেই সমুদ্র-স্নানে নেমে তলিয়ে যাওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তার পরেও কোনও সতর্কতা মানতে নারাজ পর্যটকরা
রবিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অবশ্য দীঘায় ‘অশনি’-র কোনও সংকেত মেলেনি। একেবারে রোদ ঝলমলে আবহাওয়া। প্যাচপ্যাচে গরমে শরীর জুড়োতে সকাল থেকেই সমুদ্র স্নানে নেমে পড়েন পর্যটকেরা। ছুটির দিন হওয়ায় পর্যটকদের ভিড় মাত্রা ছাড়িয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে রীতিমত হিমশিম পুলিশকর্মী থেকে নুলিয়ারা। অতিরিক্ত ভিড় এবং ‘অশনি’-র মাঝে সমুদ্রে যাতে দুঘর্টনা না ঘটে, সে ব্যাপারে তৎপর জেলা প্রশাসন। ব্যবস্থা করা হয়েছে বাড়তি নজরদারির।
ঘূর্ণাবর্ত ‘অশনি’র কারণে রবিবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া চরিত্র বদলে যাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। সোমবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরুর পূর্বাভাস রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ার সাথে ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলে সতর্ক বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। কিন্তু সমস্ত সতর্কবার্তাকে উপেক্ষা করেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে দিঘায়।
রবিবার সপ্তাহান্তে দীঘায় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। তা ছাড়া গত কয়েকদিন ধরে ঈদ উপলক্ষে ভিড় লেগেই রয়েছে। সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে ঘূর্ণাবর্ত চাক্ষুষ করার লোভেও অনেক কৌতূহলী মানুষ পাড়ি দিয়েছেন দিঘায়। যদিও এ দিন সকাল থেকে দীঘায় রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া। তাপমাত্রার পারদ অনেকটাই ঊর্ধ্বমুখী। ফলে গরম থেকে বাঁচতে সমুদ্র স্নানে মত্ত পর্যটকরা। তবে ঝুঁকি এড়াতে নারাজ দিঘা প্রশাসন। পরপর দু’দিন সমুদ্র স্নানে নেমে পর্যটকদের তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে সৈকতে। পর্যটকেরা যাতে সমুদ্র স্নানে নেমে বিপদসীমা অতিক্রম না করেন সে ব্যাপারে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে নুলিয়া থেকে পুলিশকর্মীরা।
শুক্রবার পরিবারের সঙ্গে দীঘায় বেড়াতে এসে সমুদ্রে নেমে তলিয়ে যান উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখার বাসিন্দা তুহিন মোল্লা। যদিও নুলিয়াদের তৎপরতায় তাঁকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়। শনিবার ফের সমুদ্রস্নানে নেমে তলিয়ে যান এক যুবক। রাহান মোল্লা নামে বছর চব্বিশের ওই যুবক দক্ষিণ ২৪ পরগনার আলিয়ানা এলাকা থেকে এসেছিলেন। তাঁকেও নুলিয়ারা জীবিত উদ্ধার করেছেন। দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ইদের ছুটি এবং তার পরে গরমের কারণে স্কুল বন্ধ। ফলে সপ্তাহ শেষে কানায় কানায় ভরে গিয়েছে সৈকত। প্রায় সমস্ত হোটেলের ঘর বাড়ন্ত।’’
প্রশাসনিক সর্তকতার বিষয়ে কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরেই দীঘায় ভিড়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের হারিয়ে যাওয়া কিংবা সমুদ্রে পর্যটকদের তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাই সৈকত জুড়ে পর্যটকদের মাইকে সচেতন করার পাশাপাশি বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’’