আইপিএলে প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফের টিকিট পাকা গুজরাত টাইটানসের
এবার আইপিএলে প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফের টিকিট পেয়ে গেল গুজরাত টাইটানস। এবার লড়াইটা হবে বাকি তিনটি জায়গার জন্য। সেই লড়াইয়ে তিনটি দল (লখনউ সুপার জায়েন্টস, রাজস্থান রয়্যালস এবং রয়্য়াল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর) স্পষ্টতই ফেভারিট। তবে লড়াইয়ে আছে আরও পাঁচটি দল।
মঙ্গলবার প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৪৪ রান তোলে গুজরাত। ৪৯ বলে অপরাজিত ৬৩ রান করেন শুভমন গিল। শেষের দিকে ২৪ বলে ডেভিড মিলারের ২৬ রান এবং ১৬ বলে রাহুল তেওয়াটিয়ার ২২ রানের সৌজন্যে ১৪৪ রান তুলতে পারে গুজরাত।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম থেকেই হোঁচট খেতে শুরু করে লখনৌ। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি রাহুলরা। দীপক হুডা (২৭ রান), আবেশ খান (১২ রান) এবং কুইন্টন ডি’কক (১১ রান) ছাড়া কেউ দু’অঙ্কের রানও পার করতে পারেননি। শেষপর্যন্ত ১৩.৫ ওভারে ৮২ রানেই অল-আউট হয়ে যায়। হেরে যায় ৬২ রানে। তার ফলে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে চলে গিয়েছে গুজরাত।
আইপিএলের প্লে-অফের লড়াই (IPL 2022 Playoffs Criteria):
- লখনৌ সুপার জায়েন্টস: ‘টেবিল টপার’-দের লড়াইয়ে হেরে গেলেও প্লে-অফের দৌড়ে এখনও এগিয়ে আছে লখনৌ। আপাতত ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্টে আছেন কে এল রাহুলরা। দুটি ম্যাচ বাকি আছে। একটি ম্যাচ জিতলেই প্লে-অফে পৌঁছে যাবেন। রাজস্থান রয়্যালস (১৫ মে) এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের (১৮ মে) বিরুদ্ধে খেলা বাকি আছে।
- রাজস্থান রয়্যালস: ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট আছে রাজস্থানের। নেট রানরেট +০.৩২৬। একটি ম্যাচ জিতলেই প্লে-অফে উঠতে পারেন সঞ্জু স্যামসনরা। তবে দুটি ম্যাচে জয় এলে শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যাবে। দিল্লি ক্যাপিটালস (১১ মে), লখনৌ(১৫ মে) এবং চেন্নাই সুপার কিংসের (২০ মে) বিরুদ্ধে খেলবে।
- রয়্যাল চ্যাালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর: আপাতত ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট আছে। পঞ্জাব কিংস (১৩ মে) এবং গুজরাত টাইটানসের (১৯ মে) বিরুদ্ধে জিতলে ১৮ পয়েন্টে পৌঁছে যেতে পারে। সেটা হলে প্লে-অফের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যাবে। সঙ্গে ভাগ্য ভালো থাকলে প্রথমে দুইয়েও শেষ করতে পারে। তবে দুটি ম্যাচ হেরে আবার নেট রানরেটের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতে পারে বিরাট কোহলিদের। আপাতত ব্যাঙ্গালোরের নেট রানরেট -০.১১৫।
- দিল্লি ক্যাপিটালস: আপাতত ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট আছে দিল্লির ঝুলিতে। তিন ম্যাচে জিতলেও প্লে-অফে নাও উঠতে পারে। কারণ সর্বোচ্চ ১৬ পয়েন্ট হতে পারে। ১৮ পয়েন্ট বা তার বেশি পয়েন্টে থাকতে পারে চারটি দল। সেই পরিস্থিতিতে ভাগ্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে দিল্লিকে। বাকি তিনটি ম্যাচ খেলবে রাজস্থান, পঞ্জাব সুপার কিংস (১৬ মে) এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (২১ মে) বিরুদ্ধে। নেট রানরেট +০.১৫০। ভাগ্য যদি অবিশ্বাস্য রকমের হয়, তাহলে ১৪ পয়েন্ট থাকলেও প্লে-অফে উঠতে পারে। তবে সেটা স্রেফ খাতায়কলমে হিসাব। বাস্তবে কার্যত অসম্ভব।
- সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: দিল্লির মতো ১১ ম্যাচ খেলে ১০ পয়েন্টে আছে। তবে নেট রানরেট (-০.০৩১) কম থাকায় দিল্লির থেকেও চাপ বেশি আছে সানরাইজার্সের উপর। বাকি তিন ম্যাচে (কেকেআর, মুম্বই এবং পঞ্জাব) জিততে তো হবেই। সঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হবে বাকিদের দিকে। ভাগ্য যদি অবিশ্বাস্য রকমের হয়, তাহলে ১৪ পয়েন্ট থাকলেও প্লে-অফে উঠতে পারে। তবে সেটা স্রেফ খাতায়কলমে হিসাব। বাস্তবে কার্যত অসম্ভব।
- কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১২ ম্যাচে ঝুলিতে ১০ পয়েন্ট আছে। নেট রানরেট -০.০৫৭। বাকি দুটি ম্যাচে (সানরইজার্স এবং লখনৌ) জিতলেও কেকেআরের প্লে-অফের টিকিট নিশ্চিত হবে না। তবে ভেন্টিলেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, সেটা হল না। চালু থাকল কেকেআরের ভেন্টিলেশন। সর্বোচ্চ পয়েন্ট ১৪ হতে পারে। সেই পরিস্থিতিতে প্রচুর ‘যদি, কিন্তু’-র উপর নির্ভর করতে হবে। চারে শেষ করতে গেলেও কেকেআরের পক্ষে এতগুলি ম্যাচের ফলাফল যেতে হবে যে চাঁদে ঘুরে আসার পরিকল্পনাও করতে পারে নাইট ব্রিগেড।
- পঞ্জাব কিংস: ১১ ম্যাচে পয়েন্ট ১০। ব্যাঙ্গালোর, দিল্লি এবং সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে খেলবে। তিনটি ম্যাচে জিতলে প্লে-অফে যাওয়ার কিছুটা সুযোগ হতে পারে। তাতে দিল্লি, সানরাইজার্সের থেকেও কাজটা কঠিন হবে। কারণ পঞ্জাবের নেট রানরেট আরও খারাপ (-০.২৩১)।
- চেন্নাই সুপার কিংস: চেন্নাই কার্যত কেকেআরের জায়গায় আছে। আপাতত ১১ ম্যাচে পয়েন্ট আট। বাকি তিনটি ম্যাচ জিতলে সর্বোচ্চ ১৪ পয়েন্ট হতে পারে। কেকেআরের মতোই এতগুলি ম্যাচের ফলাফল সিএসকের পক্ষে যেতে হবে যে চাঁদে ঘুরে আসার পরিকল্পনাও করতে পারেন মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। তবে কেকেআরের থেকে নেট রানরেট ভালো।