উত্তর কোরিয়ায় মিলল প্রথম করোনা সংক্রমণের হদিস, কঠোর লকডাউনের ঘোষণা
গত দু’বছর ধরে করোনা অতিমারির ভয়াবহতার মুখোমুখি হয়েছে বিভিন্ন দেশ। চলতি বছরেও চীন-সহ বিভিন্ন দেশেই কোভিডের দাপট বজায় রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রথমবার কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ল উত্তর কোরিয়ায়। কিম জং উনের দেশে এই প্রথম কোভিড আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। আর তা জানাজানি হতেই সে দেশে কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে চীনে প্রথম করোনাভাইরাসের হদিশ মিলেছিল। তারপর ২০২০ সালে তা বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু, উত্তর কোরিয়ায় কোভিড সংক্রমণ ছড়ায়নি বলে দাবি করা হয়েছিল। বরং যখন বিশ্বজুড়ে কোভিডের দাপাদাপি চলছিল সে সময় সীমান্ত লাগোয়া এলাকা কার্যত অবরুদ্ধ করে দিয়েছিল কিম প্রশাসন।
জানা যাচ্ছে, পিয়ংইয়ং-এ জ্বরে আক্রান্ত কয়েকজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তারপরই কোভিড সংক্রমণের হদিশ মেলে। কোরিয়ার সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। তবে, করোনায় কতজন আক্রান্ত হয়েছেন, সেই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি উত্তর কোরিয়া। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বৈঠক করেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। করোনাভাইরাস রুখতে ব্যাপক কড়াকড়ি বিধিনিষেধ প্রয়োগের বার্তা দেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। জানা যাচ্ছে, ওই বৈঠক থেকে কিম বার্তা দিয়েছেন, ”অল্প সময়ের মধ্যে ভাইরাসকে নির্মূল করাই লক্ষ্য।”
পর্যবেক্ষক মহলের দাবি, সে দেশে বহুদিন ধরেই করোনার প্রকো রয়েছে। যদিও তা কখনই স্বীকার করা হয়নি। এখনও পর্যন্ত সে দেশে কোভিডের টিকাকরণ শুরু হয়নি। চীনের কোভিড টিকা ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে কিম প্রশাসন। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, করোনার সংক্রমণ রুখতে টিকাকরণ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। সেক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ায় টিকাকরণ শুরু না হওয়ায় সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, চীনে নতুন করে করোনা সংক্রমণ মাথাচাড়া দিয়েছে। চীনের সাংহাইয়ে কোভিড সংক্রমণ চিন্তা বাড়াচ্ছে। সংক্রমণ না নিয়ন্ত্রণে আসায় কড়াকড়ি আরও জোরদার করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে যে, জরুরি কারণ ছাড়া বাসিন্দারা যেন বাড়ির বাইরে না বেরোন। কোভিড সংক্রমণ মোকাবিলায় বেজিংয়েও বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার থেকে বেজিংয়ে সরকারি অফিস, সুপারমার্কেট, শপিং মল, হোটেল, রেস্তরাঁয় এলে ৪৮ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে রাখতে হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপাতত অনলাইনেই পঠনপাঠন চলবে। বিনোদনমূলক পার্ক আপাতত বন্ধ থাকবে। সংক্রমণ রুখতে করোনার গণপরীক্ষা চালানো হবে। বেজিংয়ের বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন জারি করা হয়েছে। যেসব এলাকায় সংক্রমণের প্রকোপ বেশি, সেখানে গণপরিবহণ বন্ধ রাখা হয়েছে।