বাংলা শস্যবিমা প্রকল্পে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন ১ লক্ষ ৪৩ হাজার আলু চাষি
কিছুদিনের মধ্যে বাজারে আলুর দাম কমবে বলে আশা করছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী বলেন, খোঁজখবর নিয়ে তাঁরা জেনেছেন, হিমঘর থেকে আরও বেশি পরিমাণে আলু এবার বের হতে শুরু করবে। উত্তরপ্রদেশ থেকেও আলু আসছে। এর জেরে আলুর দাম কমবে। কৃষিমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্য সরকারের বাংলা শস্যবিমা প্রকল্পে এবার ১ লক্ষ ৪৩ হাজার আলু চাষি ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৮৮৬ জন চাষির অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ৬৩ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিরা দিন তিনেকের মধ্যে টাকা পেয়ে যাবেন। চাষিদের মোট ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে ১১২ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। কৃষিমন্ত্রী বলেন, সাধারণত জুন মাস নাগাদ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্য সরকারের কথা মেনে রাষ্ট্রায়ত্ত কৃষি বিমা সংস্থা এখনই টাকা পাঠানো শুরু করেছে। হুগলি জেলায় সবথেকে বেশি প্রায় সাড়ে ৬৩ হাজার কৃষক ক্ষতিপরণ পাচ্ছেন।
খুচরো বাজারে আলুর দাম মে মাসের গোড়া থেকেই হঠাৎ বৃদ্ধি পেতে শুরু করায় সাধারণ ক্রেতারা বেশ উদ্বিগ্ণ হয়ে পড়েছেন। যে জ্যোতি আলু কিছুদিন আগেও ২৪-২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল, তা ৩০-৩২ টাকায় পৌঁছেছে। চন্দ্রমুখী আলুর কেজি এখন ৪০ টাকার ঘরে। আগামী দিনে আলুর দাম কোথায় পৌঁছবে, তা নিয়ে বেশ চিন্তায় সাধারণ মানুষ। হিমঘর মালিক ও আলু ব্যবসায়ীদের সংগঠনের বক্তব্য, হিমঘর থেকে আলু বের হওয়া শুরু হতেই দাম বেড়েছে। এবার ১৮ টাকা কেজি দরের আশপাশে হিমঘরে আলু লোড হয়েছে। আলু বের করার সময় হিমঘরের ভাড়া ও অন্যান্য কিছু খরচ যুক্ত হচ্ছে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান লালু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হিমঘর থেকে বের হওয়ার সময় এখন প্রতি কেজি জ্যোতি আলুর দাম পড়ছে ২৩-২৪ টাকা। এরপর পরিবহণ খরচ ও বিভিন্ন স্তরের বিক্রেতা-ব্যবসায়ীদের লভ্যাংশ প্রভৃতি যুক্ত হয়ে খুচরো বাজারে দাম ৩০ টাকার আশপাশে থাকছে। চন্দ্রমুখী আলুর উৎপাদন খুব কম হওয়ার জন্য, এবার পাইকারি বাজারে দাম ৩৩-৩৪ টাকার আশপাশে রয়েছে।
অপরদিকে, উত্তরপ্রদেশে এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। অনেক কম দামে সেখানকার হিমঘরে আলু লোড হয়েছে। সেখান থেকে তুলনামূলকভাবে কম দামে আলু এখানে চলে আসতে পারে। যা পরিস্থিতি তাতে এবার জ্যোতি আলুর দাম খুচরো বাজারে ৩০-৩২ টাকার আশপাশে থাকবে বলে তাঁরা মনে করছেন। অসময়ের বৃষ্টির জন্য এবার দক্ষিণবঙ্গে আলুর ফলন অনেকটা কম হয়েছে। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গে বাম্পার ফলন হয়েছে। উত্তরবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশ থেকে আলু এনে দক্ষিণবঙ্গের হিমঘরে মজুত করা হলেও, ৩০ শতাংশও ভর্তি করা যায়নি। সব মিলিয়ে রাজ্যে এবার ৬১ লক্ষ টন আলু হিমঘরে মজুত করা হয়েছে। যা গত বছর ছিল ৭২ লক্ষ টন।