ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে সংগঠন চালানো যায় না! বঙ্গ বিজেপিকে বেনজির আক্রমণ অর্জুনের
বিজেপির গলার কাঁটা হয়ে উঠেছেন, তাদের দলীয় সাংসদ অর্জুন সিংহ। বাংলা পাট শিল্পের বেহাল দশা নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ জারি রেখেছেন তিনি। জোরালো হয়েছে দল বদলের জল্পনা, কেন্দ্রীয় বিজেপিও অর্জুনের মানভঞ্জনের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।
রাত পোহালেই আবারও দিল্লি উড়ে যাচ্ছেন। তার আগেই ফের একবার বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অর্জুন সিংহ। তাঁর দাবি, তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের বিজেপির কেউ গুরুত্ব দেন না। তৃণমূল স্তরে গিয়ে রাজনীতি করার বদলে, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব সোশ্যাল মিডিয়া আবদ্ধ হয়ে রয়েছেন বলেও কটাক্ষ করেন অর্জুন। বঙ্গ বিজেপির নেতাদের একাংশই দলের ভাল চান না বলেও দাবি করেন তিনি।
পাটশিল্প এবং জুটমিল কর্মীদের অধিকারের দাবিতে নিজের দলের সরকারের বিরুদ্ধেই সরব ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুনকে। কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ না করলে তিনি রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতেও দ্বিধা করবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তখন থেকেই অর্জুন বেসুরো বাজছেন বলে কানাঘুষো চলছিল রাজ্য বিজেপিতে।
তার মধ্যেই রবিবার সংবাদমাধ্যমে রাজ্য বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ খোলেন অর্জুন। এদিন তিনি বলেন, “তৃণমূল থেকে যাঁরা বিজেপিতে এসেছেন দলের অনেকেই তাঁদের গুরুত্ব দেয় না। ভাবে, বহিরাগত এসেছে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব সোশাল মিডিয়ায় আবদ্ধ হয়ে আছেন। সংগঠন ঘরে বসে চলে না। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ করে সংগঠন চলে না। তাই তো দেখছি। এক ছবিকে চার বার পোস্ট করে। ভাবে এটাই রাজনীতি। বাংলায় রাজনীতি করতে হলে, সরকার পরিবর্তন করতে গেলে তৃণমূল স্তর থেকে রাজনীতি করতে হবে। বঙ্গ বিজেপির অনেকেই দলের ভাল চায় না। তারাই এসব নিয়ে আলোচনা করে, ভাবে। আমরা মনপ্রাণ দিয়ে দলটিকে প্রতিষ্ঠিত করতেই এসেছিলাম। এখনও তাই করে যাচ্ছি।”
অর্জুন নিজে বিজেপির সাংসদ এবং বঙ্গ বিজেরির সহসভাপতিও। পদে বসিয়েও বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার করে রেখেছেন বলে দাবি অর্জুনের। তিনি বলেন, “আমায় পদ দেওয়া হয়েছে, পেন দেওয়া হয়েছে, কালি দেওয়া হয়নি। ২০১৯-এর ভোটে এক নেতা বলেছিলেন অর্জুনকে হারাতে হবে। ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার করে রেখেছে। সভআপতি করে দিলেন, অথচ কোনও ক্ষমতা নেই।”
সোমবার দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন অর্জুন। অর্জুনের কথায়, “নাড্ডাজির সেক্রেটারি ফোন করে সোমবার দুপুরে ১২টার পর দেখা করতে যেতে বলেন। কেন ডেকেছেন, কী বলবেন জানা নেই। এখনও সাংসদ রয়েছি, সহসভাপতি রয়েছি, তবে কাল রাখবে কিনা, জানি না।” অর্জুনের এহেন মন্তব্য আরও এক ধাপ জোরালো হল তার ঘরে ফেরার জল্পনা। কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে ফয়সালার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ, তবে কি বৈঠকে কোন কাজই হল না? তার তাতেই নাড্ডার তলব! কিন্তু ফের একবার রাজ্য বিজেপিকে আক্রমণ করে দল বদলেই সম্ভাবনাকে জিয়ে রাখতেন ব্যারাকপুরের সাংসদ।