উত্তরবঙ্গে চালু হতে চলেছে চা পর্যটন, রয়েছে আরও চমক
উত্তরবঙ্গে (North Bengal) কেবল জঙ্গল, পাহাড়, চা বাগান দেখানোই নয়, চা শিল্পও পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়। বাগান থেকে চা পাতা তুলে কীভাবে সেটি প্রস্তুত করা হয়, সেটা জানতে চান অনেক পর্যটকই। পাহাড়ে ওঠা-নামার পথে দুই ধারে বিস্তীর্ণ চা বাগান এবং লাগোয়া বড়-বড় ফ্যাক্টরিগুলির দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। এবার ফ্যাক্টরির ভিতরে ঢুকে কেবল চা প্রস্তুত প্রণালী দেখা নয়, চা পান করে সময় কাটানো থেকে গোটা ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখতে পারবেন পর্যটকেরা। এবার এমনই উদ্যোগ নিয়েছে কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (CII)। এককথায়, CII ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরিজম’ (Industrial Tourism) চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে।
উত্তরবঙ্গের (North Bengal) প্রতি বাঙালি সহ পাহাড়প্রেমীদের বিশেষ ভাললাগা রয়েছে। বর্তমানে রাজনৈতিক দিক থেকে অনেকটাই শান্ত পাহাড়। করোনা-পর্ব কাটিয়ে উত্তরবঙ্গে পর্যটকদের ভিড়ও আবার ভাল জমতে শুরু করেছে। আর চা শিল্প ছাড়া উত্তরবঙ্গের প্রধান শিল্প হল পর্যটন শিল্প। তাই এবার উত্তরের পর্যটন শিল্পের সঙ্গেই ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরিজম চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি। আর এটা পর্যটকেরা আগ্রহের সঙ্গে গ্রহণ করবে বলেই দাবি CII-এর উত্তরবঙ্গের (North Bengal) চেয়ারম্যান প্রদীপ পুরোহিতের। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গে টি ট্যুরিজম রয়েছে।পাহাড় জঙ্গল রয়েছে। তার পাশাপাশি আমাদের এখানে ছোট বড় চা-শিল্প সহ নানান শিল্প আছে। তাই পর্যটকদের কেবল জঙ্গল, পাহাড়,বা চা বাগান দেখানোই নয়, এই শিল্পগুলিও দেখানো যেতে পারে। পর্যটকদের ফ্যাক্টরির ভিতরে এনে কিছুটা সময় কাটিয়ে, চা-কফি খাইয়ে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।” ফলে এটাকে Tea Tourism নামও দেওয়া যেতে পারে।
CII-এর এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে পর্যটন শিল্পের যেমন উন্নতি ঘটবে, তেমনই শিল্পে বিনিয়োগ আসতে পারে বলেও আশাবাদী কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (CII) কর্তৃপক্ষ। এব্যাপারে স্পষ্ট করে প্রদীপ পুরোহিত বলেন, আমরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরিজম করতে চাইছি। এখানে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত আছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে ইন্ডাস্ট্রি ট্যুরিজম (Industrial Tourism) চালু হলে ভালোই হয়। এর ফলে অনে পর্যটক যেমন আগ্রহী হবেন, তেমন শিল্প গড়তে অনেক উদ্যোগপতিও আসতে পারেন।
কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে জলপাইগুড়ি মোহিতনগরে গড়ে ওঠা সিমেন্ট ফ্যাক্টরির কার্যকলাপ শিল্পপতিদের দেখানো হয়েছে। কীভাবে পাহাড়ে বড় শিল্প চলছে, কীভাবে নিরাপত্তা রাখা যায়, কীভাবে শিল্প স্থাপন সম্ভব সে ব্যাপারে বিস্তারিত শিল্পপতিদের ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের দেখানো হয়েছে। CII চাইছে, উত্তরবঙ্গে শিল্প আসুক। বিনিয়োগ করুন শিল্পপতিরা। পর্যটন আরও সমৃদ্ধ হোক।
CII-এর উদ্যোগের প্রশংসা করে হিমালয়াল হসপিটালিটি ট্রাভেল ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের (Himalayan Hospitality Traven Development Network) সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “উত্তরবঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরিজমের (Industrial Tourism) বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। চা কীভাবে তৈরী হয় তা দেখতে চা বাগানে পর্যটকরা আসছেন। এখানে অনেকে বড়-ছোট শিল্প গড়ে উঠেছে। যে শিল্প এখানে রয়েছে, সেটা যদি পর্যটকদের দেখানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাহলে শিল্পের প্রচারের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরাও লাভবান হবেন।”