মানিক মুখ্যমন্ত্রী হতেই বিদ্রোহী উপমুখ্যমন্ত্রী? জিষ্ণুর টুইটার বায়োর পরিবর্তনে প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
হঠাৎ করেই মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়ে গেল ত্রিপুরায়। তবে তা করেও অবশ্য ত্রিপুরা বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দূর করা গেল না৷ বরং মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণার পরই রাজ্যের এক মন্ত্রীর বিক্ষোভে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বকে৷ মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রী বাছায় রাগে চেয়ার তুলে ছুড়ে মারেন মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল৷ সেইসঙ্গে চিৎকার করে তিনি বলতে থাকেন, ‘আমি মরে যাবো, এই দল আর করব না৷’ সেই ঘটনার রেশ মিটতে না মিটতেই এবার আরও বড় ইঙ্গিত দিলেন ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা (Jishnu Dev Verma)।
কী করলেন ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী? আজ যখন ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন মানিক সাহা, সেই সময় নিজের ট্যুইটার বায়ো থেকে নিজের উপমুখ্যমন্ত্রী পরিচয়ই সরিয়ে দিলেন। শুধু রাখলেন বিধায়ক পরিচয়। কিছুদিন আগেই তার ছেলের ভিডিও ভাইরাল হয়। মদ্যপ অবস্থায় অভব্য আচরণ করেন সংসদীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে। সেখানে ছিলেন দ্বিগিজয় সিং ও গৌতম গম্ভীর। ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে বিজেপি নেতৃত্ব। এর পরেই পদত্যাগ করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব? এর পর কি তাহলে বদল হবে উপমুখ্যমন্ত্রীও। জিষ্ণু দেব বর্মা কি নিজে থেকেই সরে দাঁড়াবেন? এই জল্পনা উস্কে দিয়েছে এই ট্যুইটার বায়োর পরিবর্তন।
বিপ্লব দেবের পদত্যাগের পর শনিবারই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানিক সাহার নাম চূড়ান্ত করে বিজেপি নেতৃত্ব৷ কিন্তু মানিকের নাম ঘোষণা হতেই বিজেপি-র পরিষদীয় দলের বৈঠকে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রাজ্যের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল৷ রামপ্রসাদ বরাবরই মানিক সাহা বিরোধী গোষ্ঠীর বলে পরিচিত৷ জিষ্ণু দেব বর্মার সঙ্গেও নতুন মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে মানতে পারছেন না তিনিও, খবর তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে।
নতুন মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের জন্য বিজেপি-র পরিষদীয় দলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ভূপেন্দ্র যাদব এবং বিনোদ তাওরে৷ তাঁদের সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেকেই৷ মানিক সাহাকে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যও চিঠি দিয়েছিলেন মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল৷ তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য রামপ্রসাদ সহ বাকিদের আপত্তি ধোপে টেকেনি৷ এদিকে, শোনা যাচ্ছে, মানিক সাহার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভায় বেশ রদবদল হতে চলেছে। অন্তত ১১ নতুন মুখ আসতে চলেছে মন্ত্রিসভায়। এদিকে, সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি করা হতে পারে বা তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করা হতে পারে। কিন্তু সব মিলিয়ে ত্রিপুরা বিজেপির অন্দরে এখন ঝড় উঠেছে।