ভিয়েতনামের খননকার্যের ছবি জ্ঞানবাপী বলে ভাইরাল নেটপাড়ায়
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের অভ্যন্তরে উদ্ধার হয়েছে শিবলিঙ্গ, এই নিয়েই সরগরম সামাজিক মাধ্যম। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভাইরাল হচ্ছে সেই ছবি।
দাবি:
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে একটি শিবলিঙ্গের ছবি ঘুরছে। ছবি দেখেই বোঝা যায়, খননকার্য চালিয়েই শিবলিঙ্গটি উদ্ধার করা হয়েছে। ছবিটিকে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে পাওয়া ‘শিবলিঙ্গ’-এর ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ১৬মে, ২০২২ সালে বারাণসী আদালত মসজিদের একটি অংশকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কারণ আদালতে আবেদনকারীদের আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে, ওই জায়গাটির তিন দিনের ভিডিওগ্রাফিক অনুসন্ধানের সময় একটি ‘শিবলিঙ্গ’ পাওয়া গিয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, “জ্ঞানবাপী মন্দিরে ১২ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ৮ ইঞ্চি ব্যাসের শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে। এখন হিন্দুরা জ্ঞানবাপী-শৃঙ্গার গৌরী কমপ্লেক্সে প্রতিদিন পুজো করার অনুমতি চাইছে।”
আসল সত্য:
ভাইরাল হওয়া ছবিটি আদপে ভিয়েতনামের। ২০২০ সালে এটি তোলা হয়েছিল এবং এর সঙ্গে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ কোনও সম্পর্ক নেই।
গুগল ইমেজ সার্চের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, ছবিটি বিজেপি নেতা তথা মোদী সরকারের মন্ত্রী খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিল্প ও জলশক্তির প্রতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ প্যাটেলের তরফে করা একটি টুইটের অংশ বিশেষ। ভিয়েতনামে শিবলিঙ্গ আবিষ্কারের সময়ে অর্থাৎ ২০২০ সালে তিনি মোদী সরকারের সংস্কৃতি ও পর্যটন দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্ব প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২৯মে ২০২০ তারিখে তাঁরই করা এক টুইটে তিনি লিখছেন, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) ভিয়েতনামের মাই সন সাইটে নবম শতাব্দীর একটি শিবলিঙ্গ খুঁজে পেয়েছেন। সেই একই ছবি জ্ঞানবাপী মসজিদে পাওয়া শিবলিঙ্গ দাবি করে ভাইরাল করা হচ্ছে।
দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও এই ছবিগুলি টুইট করেছিলেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হিন্দু স্থাপত্যের আবিষ্কারের খবর সেই সময় বেশ কিছু সংবাদপত্রেও প্রকাশিত হয়েছিল।
বিজেপির শাসনকালে দেশজুড়ে ইতিহাস মুছে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইসলামি স্থাপত্যকে ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লেগেছে একদল মানুষ। যার হাতিয়ার হচ্ছে এই জাতীয় বিভিন্ন ভুয়ো খবর। এ দেশ বৈচিত্রের, বহু ধর্মের মিলনক্ষেত্রে। এখানে যেকোন ধর্মের কোন নিদর্শনকে ধ্বংস করার অর্থ; দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে হত্যা করা। যা কখনওই কাঙ্খিত নয়।