পশ্চিম মেদিনীপুরে পর্যটনের জন্য ২৪টি কেন্দ্র জুড়ে তৈরি হচ্ছে তিনটে সার্কিট
২৪টি পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে তিনটি সার্কিট গড়ে এই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পর্যটন শিল্পে জোয়ার আনতে চাইছে রাজ্য। এই তিনটি সার্কিট হল ‘নেচার সার্কিট’, ‘হেরিটেজ সার্কিট’ ও ‘রিলিজিয়াস অ্যান্ড কালচারাল সার্কিট’। সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তিনটিকেই । প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। একইসঙ্গে সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে এই সার্কিটগুলিতে।
মোট ন’’টি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়া জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে নেচার সার্কিট। শিলাবতী নদীর তীরে বাংলার একমাত্র গিরিখাত গনগনি থেকে শুরু করে ধাদিকার জঙ্গল। একই ধরনের পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে সহজে চিহ্নিত করে সেখানে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা এবং পর্যটকদেড় পছন্দ মতো ভ্রমণের জায়গা বেছে নিতে পারা, এই জেলায় পর্যটন সার্কিট গড়ে তোলার পিছনে এই দু’টিই মূল কারণ। যিনি প্রকৃতি ভালোবাসেন, তিনি বেড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারবেন নেচার সার্কিট। যাদের ঐতিহাসিক জায়গা বেশি পছন্দ হয়, তাহলে তারা যেতে পারেন পারেন হেরিটেজ সার্কিটে।
গনগনি ও ধাদিকার জঙ্গল ছাড়াও শিরোমণিগড়, গোপগড় ইকোপার্ক, গুড়গুড়িপাল ইকোপার্ক, অ্যানিকাট ড্যাম ও হিজলি ইকোপার্কের মতো জায়গা নেচার সার্কিটে রয়েছে। এই জেলার হেরিটেজ সার্কিটও বেশ আকর্ষণীয়। এর মধ্যে রয়েছে কাঁসাই নদীর তীরের পাথরা। মেদিনীপুর শহর থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে ছোট ছোট শতাধিক টেরাকোটার মন্দির। আছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান বীরসিংহ গ্রাম।
বাংলার বীর সন্তান ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্থানকেও সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু করেছে রাজ্য। এই জায়গাকেও হেরিটেজ সার্কিটের মধ্যে আনা হয়েছে। এই সার্কিটেই আছে নারাজোল রাজবাড়ি, জলহরি ও হাওয়ামহল। খড়্গপুর থেকে ৪০ কিমি দূরে মোগলমারি বৌদ্ধ মহাবিহার। আছে বিশ্ববিখ্যাত কুরুম্বেরা ফোর্ট।
যাঁরা সংস্কৃতি চর্চা করেন, তাঁদের জন্যও রয়েছে বেশ কিছু জায়গা। তাঁদের সব থেকে পছন্দের জায়গা হতে পারে আদিবাসী মিউজিয়াম, পটচিত্রের জন্য বিখ্যাত নয়াপাতা গ্রাম ও কংসাবতীর ধারে সূর্যাস্তের হাট। অবশ্যই, কর্ণগড় মন্দিরে না গেলে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ভ্রমণ। এই পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে রাখা হয়েছে রিলিজিয়াস অ্যান্ড কালচারাল সার্কিটের অধীনে।
পর্যটকরা এই সব এলাকায় যাতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পান, তার জন্য ইতিমধ্যেই একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে পর্যটন দপ্তর ও জেলা প্রশাসন। রাজ্যের উদ্যোগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলার কয়েকজন ট্যুর গাইডকে।