ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলোকে পিছনে ফেলে কৃষিতেও এগিয়ে বাংলা, স্বীকৃতি কেন্দ্রের
কৃষিতেও এগিয়ে বাংলা। ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিই ছিল উদ্দেশ্য, সেই কারণেই কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আবশ্যক। সেই লক্ষ্যেই দেশজুড়ে চালু হয়েছিল জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশন। সেই প্রকল্পেই অধিকাংশ রাজ্যকে পিছনে ফেলে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে নজির গড়ল বাংলা। হাজার প্রতিকূলতা ও অর্থনৈতিক সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে রাজ্যের প্রান্তিক কৃষকদের পাশে, তা আবারও প্রমাণিত হল এই পরিসংখ্যানে। মোদী সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাত এবং বিজেপির রামরাজ্য যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশও এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে। চলতি অর্থবর্ষে কাজ চালিয়ে যেতে ছাড়পত্র পাওয়া প্রথম নটি রাজ্যের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশন প্রকল্পে কেন্দ্র সরকারের অনুমোদিত অর্থের ৪০ শতাংশ রাজ্যকে দিতে হয়। একটি আর্থিক বছরে মোট তিনটি কিস্তিতে টাকা দেয় কেন্দ্র। প্রতিবার কেন্দ্র ও রাজ্যের মিলিত অনুমোদিত অর্থের ৭৫ শতাংশ খরচ সম্পূর্ণ হওয়ার পরই মেলে পরের কিস্তির টাকা। সময়মতো ব্যয়ই নয়, রাজ্যের ভাগের ৪০ শতাংশ অর্থ খরচ হওয়াও বাধ্যতামূলক। এই দুটি ক্ষেত্রেই গুজারাত ও উত্তরপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত ডবলইঞ্জিন রাজ্যগুলিকে পিছনে ফেলেছে বাংলা।
প্রসঙ্গত, ঠিক মতো টাকা খরচ না করায় খোদ মোদীর রাজ্য গুজরাত প্রথম কিস্তির পর আর কোনও টাকা পায়নি। যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ প্রথম দুটো কিস্তি পেলেও, শর্ত না পূরণ হওয়ায় তৃতীয়টির টাকা পায়নি তারা। ওই দুই রাজ্যে বিজেপি সরকারের কারণেই বঞ্চিত হয়েছে দুই ডবল ইঞ্জিন রাজ্যের চাষিরা। কয়েকটি মহলের ধারণা সময় মতো টাকা ব্যবহারের শংসাপত্র তা না দিতে পারায় দ্বিতীয় বা তৃতীয় কিস্তির টাকা পায়নি গুজরাত বা উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রথম দুই কিস্তিতে বাংলার প্রায় দ্বিগুণ, ৫২ কোটি ৭ লক্ষ টাকা পেয়েছে উত্তরপ্রদেশ।
রাজ্যের এক আধিকারিকের দাবি, বাংলায় অন্তত ৯ লক্ষ কৃষক উপকৃত হয়েছেন। নাশন্যাল ফুড সিকিউরিটি মিশনে (এনএফএসএম) মূলত তিনটি ভাগে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল খাদ্যশস্য। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এই খাতে কেন্দ্রের দেওয়া প্রথম দুটি কিস্তির ২৮ কোটি ১১ লক্ষ টাকাসহ রাজ্যের ৪০ শতাংশ অর্থ সময়মতো খরচ করেছে বাংলার কৃষিদপ্তর। তৃতীয় কিস্তির টাকাও চাষিদের কাজে লাগানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের প্রকল্পের কাজ রূপায়ণের জন্য ইতিমধ্যেই মিলেছে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র। কেন্দ্রীয় অনুমোদন এসেছে ৪৩ কোটি ৪৫ কোটি লক্ষ টাকার। আর রাজ্যকে খরচ করতে হবে ২৮ কোটি ৯৬ লক্ষ। মোট ৭৩ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হচ্ছে।
গত অর্থবর্ষে ২৯ মার্চ বাংলার তৃতীয় কিস্তির ১২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার অনুমোদনের চিঠি আসে। কৃষিদপ্তর সূত্রে খবর, রাজ্য এই টাকা ব্যবহারের শংসাপত্রও সময়মতোই দিতে চলেছে। এই সাফল্য প্রসঙ্গে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মতে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী একেবারে তৃণমূলস্তরে কাজের নিয়মিত তদারকির ফলেই বাংলার কৃষকরা সময়মতো সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন।