সাগ্নিকের উপার্জনের টাকা ঢুকেছে পল্লবীর পরিবারের একাউন্টে? তদন্তে পুলিশ
অভিনেত্রী পল্লবী দের পরিবারের কয়েকজন সদস্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে বিপুল টাকা। পুলিশি তদন্তের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই দাবি সাগ্নিক চক্রবর্তীর (sagnik chakraborty)। এবার সত্য অনুসন্ধান করতেই হাওড়ার জগাছার ব্যাঙ্কে পৌঁছল গড়ফা থানার আধিকারিকেরা। নোটিশ পাঠানোর পরেও পল্লবীর বাবা নিলু দে সোমবার রাত পর্যন্ত থানায় এসে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেননি বলেই পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গড়ফার গাঙ্গুলিপুকুরের আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে এক সপ্তাহ আগে অভিনেত্রী পল্লবীর (Pallabi Dey) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তারপরই খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তী। তদন্ত উঠে আসে, ওই যুবক ভুয়া কল সেন্টার চালাতেন। পুলিশি তদন্তে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, মূলত অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দাদের বলা হত, তাঁদের কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপে ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে। এক ধরণের বিশেষ ম্যালওয়্যারের সাহায্যে কম্পিউটারের স্ক্রিন সাদা অথবা কালো করে দেওয়া হত। বিশেষ ই-ওয়ালেট অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হলে তবেই সারানো হবে কম্পিউটার। এই পুরো বিষয়টি সাগ্নিকের কথা মতো চলত। টাকা পেলেই কম্পিউটার বা ল্যাপটপ আবার আগের অবস্থায় নিয়ে আসা হত। ই-ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েকটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা পাঠানো হত। এই উপায় মানুষকে বোকা বানিয়ে মাসে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করত সাগ্নিক। সেই টাকা নিজের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ছড়িয়ে রাখত সাগ্নিক।
তার নিজের পরিবারের লোকেদের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও সেই টাকা রাখা হয়েছে। সেই টাকা দিয়েই নিউটাউনের নতুন ফ্ল্যাট ও অডি গাড়ি কেনা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশি তদন্তে সাগ্নিকের দাবি, সে পল্লবীর পরিবারের একাধিক সদস্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পাঠাত। সম্প্রতি সাগ্নিকের মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এখনও পর্যন্ত সাগ্নিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে না। পল্লবী ও তার পরিবারের লোকেরা সাগ্নিকের পরিবারকে কত টাকা দিয়েছেন, তা জানতে পল্লবীর বাবাকে নোটিশ দিয়ে থানায় ডেকে পাঠানো হয়।
কিন্তু পল্লবীর বাবা ব্যাঙ্কের প্রয়োজনীয় নথিপত্র থানায় এসে জমা না দেওয়ায় কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সাগ্নিকের দাবির সত্য অনুসন্ধান করতে গড়ফা থানার আধিকারিকরা সোমবার ২৩ মে হাওড়ার জগাছায় একটি ব্যাঙ্কে যান। সূত্রের খবর, মূলত পল্লবী দে-র পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করা হয়।
অ্যাকাউন্টগুলোতে গত এক বছরে কত টাকার লেনদেন হয়েছে, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করে। আবার বেনামে সাগ্নিক হাওড়ার ব্যাঙ্কে টাকা রেখেছিলেন কি না, তারও খোঁজ নেওয়া হয়। পল্লবী ও সাগ্নিকের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে মোট কত টাকার আদান-প্রদান ঘটেছের, তারও হদিশ চালিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।