জেলে আত্মহত্যা করতে চান সুতপার খুনি সুশান্ত? তটস্থ পুলিশ
কলেজ পড়ুয়া সুতপা চৌধুরী হত্যায় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে বহরমপুরের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দি রাখা হয়েছে। বিশেষ কারাগারে রাখা হয়েছে তাকে। সর্বক্ষণের নজরদারি চালানোর সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। পেশাগত খুনির মতোই ভাবলেশহীন সুশান্ত। বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই তার। দুই পর্ব মিলিয়ে মোট ১২দিনের পুলিশি হেফাজতের পর সুশান্তকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এরপরেই সুশান্তকে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২মে গোরাবাজার এলাকায় সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে মালদহের বাসিন্দা সুতপাকে খুন করে তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত। মালদহ থেকে বহরমপুর এসে, মেস ভাড়া নিয়ে থেকে সুতপার উপরে দিনের পর দিন নজর চালিয়ে গিয়েছে সুশান্ত। তারপর ২মে সন্ধ্যায় সুতপার মেসের সামনে ছুরি মেরেই তাঁকে খুন করে সুশান্ত। ঘটনার পর মালদহে পালিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। গ্রেপ্তারের পরেও সুশান্ত জানতে চায়, সুতপা মারা গিয়েছে কি না, সুশান্তর প্রতিহিংসাপরায়ণ মানসিকতা নিয়েও শঙ্কিত ছিল তদন্তকারীরা। সুশান্তর এহেন পরিণতির জন্য ইমোশনাল ডিস্টারবেন্সকে দায়ী করছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা।
মানুষ যাকে ভালবাসে তাকেই সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে, সুশান্তর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। সুশান্তর ক্ষেত্রে সতর্ক পুলিশ। কারণ এই জাতীয় ঘটনায় যা হয়, আস্তে আস্তে গ্লানি বাড়তে থাকে। মনোবিদেরা মনে করছেন, সুশান্তর মধ্যেও হবে, গ্লানিবোধ আসতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই ঘটনার তিন থেকে চার মাস পরে, এই ঘটনার কারণ হিসেবে নিজেকে দায়ী করে অভিযুক্তরা ধীরে ধীরে ডিপ্রেশনগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তখনই তারা আত্মহত্যার দিকে এগিয়ে যায়। চিকিৎসকদের এমন সম্ভাবনার কথা জানার পর থেকেই জেল কর্তৃপক্ষও সুশান্তর ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে শুরু করেছেন। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ২৪ঘণ্টার নজরদারি চালানো হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থার দিকেও নজর রাখছেন জেলের চিকিৎসকেরা। নজরদারির জন্য জেলরক্ষীও বহাল করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আইনি লড়াইয়ের জন্য সুশান্ত এক আইনজীবীর আবেদন জানিয়েছে। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির কাছে আইনজীবী নিয়োগের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, বহরমপুর কোর্টের অভিজ্ঞ আইনজীবী পীযূষকান্তি ঘোষ সুশান্তর হয়ে সওয়াল করবেন। আগামী ৩০মে সুশান্তকে ফের বহরমপুর আদালতে তোলা হবে, বলেই জানা গিয়েছে।