দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে সুপ্রিম কোর্টে জয় পেলেন দেহোপজীবীরা, মিলল পেশার আইনি স্বীকৃতি
দীর্ঘ যুদ্ধের পর অবশেষে জয়, আইনি স্বীকৃতি মিলল দেহোপজীবীদের। দেহোপজীবীতাকেও বাকি সাধারণ কাজের মতোই পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। শীর্ষ আদালত আজ জানিয়ে দিল, দেহোপজীবীতাও আইনস্বীকৃত পেশা। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষদেরও সম্মানজনক জীবনযাপন করার অধিকার রয়েছে।
যারা যৌনকর্মী অর্থাৎ যৌন পেশায় নিযুক্তদের আর কোনওরকম হেনস্তা করা যাবে না। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মামলাও দায়ের করতে পারবে না পুলিশ। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের সম্মানজনক জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে। তাদেরও আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি কোনও প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছায় দেহোপজীবীতায় নিযুক্ত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আর কোনও অপরাধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও, বিচারপতি বিআর গভই, এবং বিচারপতি এএস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চ দেহোপজীবীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা বেঁধে দিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ জানাচ্ছে, দেহোপজীবীরা পেশাগত ক্ষেত্রে কোনরকমের হেনস্তার শিকার হলে, তাঁকে সবরকম আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। পুলিশি অভিযানের সময়ও তাদের পরিচয় গোপন রাখার বিষয়ে নজর রাখতে হবে। দেহোপজীবীদের অধিকার নিয়ে তাঁদেরকে সচেতন করতে হবে। দেহ ব্যবসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণে কোনও মহিলাকে তাঁর সন্তানের থেকে আলাদা করে রাখা যাবে না। কোন শিশু পতিতালয়ে রয়েছে মানেই যে তাকে পাচার করে সেখানে আনা হয়েছে, এমনটা ভাবা যাবে না।
দেশে সর্বোচ্চ আদালতের এই নির্দেশিকার সুফল পাবেন দেশের প্রায় ৯ লক্ষ দেহোপজীবী। দেশে দেহ ব্যবসা আইনত অবৈধ না হলেও, দেহোপজীবীতার প্রতি দেশে বিরূপ মনোভাব রয়েছে। এখনও অনেকেই ভ্রু কুঁচকান। এই কারণে পরিষেবা দিতে গিয়েই নানান রকম হেনস্তার শিকার হতে হয় তাদের। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই নতুন নির্দেশিকা সামাজিক বন্ধন থেকে মুক্ত করল সেই সব মানুষের।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির জনসংযোগ আধিকারিক মহাশ্বেতা মুখার্জি দৃষ্টিভঙ্গিকে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।