১৯৯৫-এর পুনরাবৃত্তি, আড়াই দশক পড়ে রাজ্যে ফিরল আম বিপর্যয়
গ্রীষ্ম মানেই আম, কিন্তু চলতি বছর আম বাঙালির আম খাওয়া বাধ সেজেছে আমের অকাল। যা মনে করাচ্ছে ২৭ বছরের পুরনো স্মৃতি! ১৯৯৫ সালের আম-বিপর্যয় ফিরল বঙ্গে। এবার বৃষ্টির অভাবে আমের স্বাভাবিক স্বাদ ও গন্ধে বদল ঘটেছে। আমের আকারও তুলনামূলক ছোট। আম ব্যবসায়ী থেকে আমপ্রেমী সকলেই বলছেন আমের মিষ্টত্বও কমে যাচ্ছে।
চলতি বছর আমের ফলন একেবারে তলানিতে। প্রায় আড়াই দশক আমের উৎপাদন সর্বনিম্নে। জৈষ্ঠের গরমে তৃপ্তির হিমসাগর, ফজলী, চৌসার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাঙালি। রাজ্যের টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দের কথায়, এবার রাজ্যে আমের ফলন অনেকটাই কম। গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশের কম আম উৎপাদন হয়েছে। জানা যাচ্ছে তিনটি কারণে ফলন কমেছে। প্রথমত, চলতি বছরের অস্বাভাবিক গরম। দীর্ঘ সময় কোনরকম বৃষ্টি হয়নি। বাংলা এক নাগাড়ে প্রায় ৮০ দিন বৃষ্টিহীন ছিল। সেই কারণে আম গাছে মুকুল এসেও খসে গিয়েছে। মুকুল নষ্ট হওয়ার কারণেই আমের ফলন ধাক্কা খেয়েছে। দ্বিতীয়ত, মরশুম শেষ হওয়ার পরে গাছের সঠিকভাবে করা খুবই জরুরি। কিন্তু, করোনার কারণে তাও ঠিকভাবে করা যায়নি। যার ফলে, আম গাছে আগাছা জন্মানোয় মুকুল এসেও বেড়ে ওঠেনি। তৃতীয়ত, মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে গাছের পাতায় ধুলে জমে যাওয়ার মুকুল ধরেনি।
মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, হুগলিতে রাজ্যের সর্বাধিক আম উৎপন্ন হয়। কলকাতায় বিভিন্ন জায়গায় আমের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা প্রতি কেজি। মরশুমের শুরুতে বৃষ্টির অভাবে আম গোড়া থেকে আলগা হয়ে পড়ে গিয়েছে। যেগুলো থেকে গিয়েছে সেগুলোর আকারও ছোট। স্বাদের দিক থেকেও আলাদা। কলকাতার বিভিন্ন বাজারের কাঁচা আম ৪০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে। দেশজুড়ে এ রাজ্যের হিমসাগরের চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছরই বাংলা থেকে অন্য রাজ্যগুলিতে বিপুল পরিমাণে হিমসাগর রপ্তানি করা হয়। কিন্তু, রাজ্যের উৎপদন কম হওয়ায় এবার আমের রপ্তানি বাণিজ্যেও টান পড়েছে।