এবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিজিটর পদও খোয়াতে চলেছেন রাজ্যপাল?
বাংলায় রাজ্যপাল ও রাজ্য সংঘাত অব্যাহত, জগদীপ ধনখড় বাংলার রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন। শিক্ষা থেকে বাণিজ্য, আইন-শৃঙ্খলা থেকে নির্বাচন কিছুই রেহাই পায়নি। রাজ্যের কাজে নানা কারণে অসহযোগিতা করেন রাজ্যপাল, তিনি পক্ষপাতদুষ্ট; এমনটাই অভিযোগ শাসক শিবিরের। অন্যদিকে রাজ্যে প্রায় সব কাজের সমালোচনায় সরব হন রাজ্যপাল। তাঁর অতিসক্রিয়তা সাধারণ মানুষেরও নজর এড়ায় না। এমনই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্যের পদ থেকে রাজ্যপালকে অপসারণের প্রস্তাবে শীলমোহর দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভার। এবার কি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যও একই পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য!
রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা গিয়েছে। উপাচার্য পদে রাজ্যের প্রস্তাব করা নাম একাধিকক্ষেত্রের বাতিল করে দিয়েছেন ধনখড়। এমতাবস্থায়, রাজ্যের মন্ত্রিসভা ২৬ মে সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে আনার জন্য বিধানসভায় নতুন বিল আনা হচ্ছে। আইন সংশোধন করছে রাজ্য সরকার। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যপদে আসতে চলেছেন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী, এই সম্পর্কিত বিলও আনা হচ্ছে। সূত্রের খবর, এবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিজিটর পদ থেকেও অপসারিত হতে পারেন রাজ্যপাল। তাঁর বদলে ভিজিটর পদে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে আনা হতে পারে।
এমন সম্ভাবনার কথাই শোনা যাচ্ছে। এও শোনা যাচ্ছে এই মর্মে ইতিমধ্যেই রাজ্যে মন্ত্রিসভায় এক দফা আলোচনাও হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, নবান্ন তরফে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। প্রসঙ্গত, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্যের পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নানা মহল থেকে নানান প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেন্দ্র সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পুঞ্চি কমিশন ২০১০ সালে এবিষয়ে সুপারিশ করেছিল। সেই সময় বিরোধীদের পক্ষ থেকে সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রাজনাথ সিংহ, এই সুপারিশ কার্যকর করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কেরলেও এই প্রস্তাব করা হয়েছে। তামিলনাড়ুতে এটি কার্যকরী হয়েছে। এ রাজ্যের মন্ত্রিসভায় এই প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়েছে।
কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর পদে শিক্ষামন্ত্রীকে বহাল করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হয়েছেন অনেকেই। বিরোধী রাজ্যনৈতিক দলগুলির কেউ কেউ বলছেন, আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী, ভিজিটর পদে শিক্ষামন্ত্রী থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে সরাসরি রাজনীতি ঢুকে পড়বে। এর পাল্টা মত দিচ্ছেন কেউ কেউ। আবার অনেকেই সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন।