উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

বন্ধ হচ্ছে বেআইনি কারবার, তালা পড়ছে বক্সায় গজিয়ে ওঠা হোটেল, রিসর্ট, রেস্তরাঁয়

June 2, 2022 | 2 min read

ছবি সৌজন্যেঃ telegraphindia

উত্তরবঙ্গের পর্যটনের এখন প্রাইমটাইম। হোটেল রিসর্ট সবই প্রায় ভর্তি! তিল ধারণের জায়গা নেই বলেই চলে। এর মাঝেই এল আদালতের নির্দেশ। বক্সা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বেআইনিভাবে গজিয়ে ওঠা সব হোটেল, রিসর্ট, রেস্তরাঁ ও পর্যটনকেন্দ্রে তালা পড়তে চলেছে।

ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল আগামী দুমাসের মধ্যেই বেআইনি নির্মাণগুলিকে ভেঙে ফেলারই নির্দেশ দিয়েছে। বক্সা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বেআইনিভাবে তৈরি হওয়া হোটেল, রিসর্ট, রেস্তরাঁগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই উঠছে। পরিবেশবিদদের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই উদ্যোগ নিয়েছে গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। গত ৩০ মে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, বক্সার এক কিলোমিটারের মধ্যে গজিয়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ধ করতে হবে। সরকারি পর্যটন কেন্দ্র রাখার বিষয়েও কড়া হচ্ছে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। লৈতি নদীর ১০০ মিটারের মধ্যে চলা স্টোর ক্র্যাশারও বন্ধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আইনের তোয়াক্কা না করেই এতদিন হোটেল-রিসর্টগুলি চলছিল। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতির কোনরকম তোয়াক্কা না করেই, গজিয়ে উঠেছিল এই কারবার। উত্তরবঙ্গের নদী ও বনাঞ্চল নিয়ে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেছিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। মহানন্দা, জয়ন্তী, মেচি ইত্যাদি নদী থেকে পাথর তোলার ব্যবসা চলছে, যা পরিবেশের সমূহ বিপদ ডেকে আনছে। অরণ্যের ‘কোর জোনে’ যেখানে মানুষের প্রবেশ নিষেধ, সেখানেও হোটেল, রেস্তরাঁ বানিয়ে জাঁকিয়ে বসেছে বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থা। নদীর তীরে রমরমিয়ে চলছে গবাদিপশুর খাটাল-খোঁয়াড়। নদীগুলিতে প্লাস্টিক, বর্জ্য, আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গ্রিন ট্রাইব্যুনাল রাজ্যের মুখ্যসচিবের বক্তব্য তলব করে ব্যবস্থা নিতে বলেন। ২০১৭ সালে জয়ন্তীতে রাজ্য পর্যটন দপ্তরের লজ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ এও কিছু বেআইনি নির্মাণ ভাঙা দেওয়া হয়েছিল।

তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, বক্সা সংরক্ষিত অরণ্যাঞ্চলে বেসরকারি উদ্যোগে ৬৯টি এবং সরকারের ২০টি পর্যটন কেন্দ্র চলছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি অরণ্যের কোর জোনেই অবস্থিত। ট্রাইব্যুনাল কোর জোনের সব প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। রাজ্যের প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু, বেসরকারি নতুন নির্মাণ থামেনি বলেই অভিযোগ। তথ্য বলছে, অরণ্য এলাকায় ৩৭টি আদিবাসীদের গ্রাম ছিল। ‘তফসিলি উপজাতি এবং অন্যান্য চিরাচরিত বনবাসী’ আইনে বদল এনে গ্রামগুলিকে ‘রেভিনিউ ভিলেজ’ স্বীকৃতি দিয়েছে রাজ্য।

ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, রেভিনিউ ভিলেজ হলেও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে কোনরকম বাণিজ্যিক ক্রিয়াকলাপ করা যাবে না। রাজ্যের প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুমাসের মধ্যেই হোটেল, রিসর্ট, রেস্তরাঁ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। বেআইনি নির্মাণগুলো যাতে বন্ধ হয়, সে বিষয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, বক্সা টাইগার রিজার্ভের ডিরেক্টর এবং আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসককে নজর রাখতে বলা হয়েছে। তাদের দায়িত্ব নিয়ে হোটেল, রিসর্ট, রেস্তরাঁ বন্ধ করতে হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Buxa, #hotels, #resorts, #Illegal businesses

আরো দেখুন