পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন বাংলার সেরা পাঁচ হলিডে ডেস্টিনেশন থেকে
কথায় বলে বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। ভ্রমণপিপাসু বাঙালির মন ছুটি পেলেই বলে ওঠে “চল মন বেড়াতে যাই”। দুর্গাপুজো মানেই লম্বা ছুটি। আর করোনার ত্রাস কমতেই বাঙালি তল্পিতল্পা গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েছে ঘুরতে।
পুজোর ঢাকে ইতিমধ্যেই কাঠি পড়ে গেছে। শুরু হয়ে গেছে ট্রেনের বুকিং। তাই, দেরি না করে, decide করে ফেলুন, এবছর পুজোয় vacation কাটাবেন কোথায়। দূরপাল্লার destination avoid করতে চাইলে, no চিন্তা। পশ্চিমবঙ্গেই এমন সব অপরূপ জায়গা আছে, যা মুগ্ধ করবে আপনাদের। দেখে নিন।
৫) পাহাড়:
পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন পাহাড় থেকে। কিন্তু হাল আমলে দার্জিলিং ক্রমেই হয়ে পড়ছে ঘিঞ্জি। তাই নিরিবিলিতে পাহাড়ের স্বাদ নিতে অফিবিট জায়গাগুলো থেকে ঘুরে আসতে পারেন। যেমন রামধুরা। সারি সারি পাইন গাছ আর তার মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘা। কালিম্পং থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, ট্রেকারদের স্বর্গরাজ্য। হনুমান টক থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখে এখানে প্যারাগ্লাইডিং করতে পারেন।
তেমনই আরেকটি জায়গা হল চটকপুর, পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট এক শৈল শহর। দার্জিলিং থেকে চটকপুরের দূরত্ব মাত্র ২৬ কিলোমিটার। এখানে ওয়াচ টাওয়ার থেকে সান্দাকফুও দেখতে পারবেন।
আবার দার্জিলিং থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জোরপোখরি, ভ্রমণপিপাসুদের পছন্দের জায়গা। জোড়া সরোবর রয়েছে বলেই এই জায়গার নাম রাখা হয়েছে জোড়পোখরি। যদি জঙ্গল ভালবাসেন তাহলে জোরপোখরিই আপনার আইডিয়াল হলিডে ডেস্টিনেশন।
চা বাগান দেখতে হলে চলে যান তাকদা। শান্ত, নিরিবিলি, নির্জন তাকদা দার্জিলিং থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে পেডং পেরিয়েই চলে যান সিলারি গাঁও। সিঙ্কনা প্ল্যান্টিং, দামসাং দুর্গ, ৩০০ বছরের পুরনো বৌদ্ধ মনেস্ট্রি, দাকশাম কেল্লা আপনাকে বিস্মিত করবেই।
৪) জঙ্গল:
পুজোর ছুটিতে জঙ্গলও হতে পারে আপনার অবসর যাপনের ঠিকানা। ঘুরে আসুন ডুয়ার্স থেকে। ডুয়ার্স নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সবুজ প্রকৃতির হাতছানি। নদী, জঙ্গল, বন্যপ্রাণী আর পাহাড়ি গ্রাম নিয়ে এক জম্পেশ আয়োজন সাজিয়ে বসে রয়েছে প্রকৃতি। চিলাপাতা, জলদাপাড়া, খয়েরবাড়ি, বক্সা, জয়ন্তী, রাজভাতখাওয়া, টোটোপাড়াসহ নানান জায়গা দেখে নিতে পারেন।
উত্তরে রয়েছে ডুয়ার্স আর দক্ষিণে সুন্দরবন। সুন্দরবন, পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য। নদী আর জঙ্গলের মিশেলে অবাক করা জীববৈচিত্র্য উপভোগ করতে আসতেই হবে বাদাবনে। উপরি পাওনা হতে পারে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দর্শন।
৩) গড়পঞ্চকোট:
রাঢ় বঙ্গের স্বাদ নিতে আপনাকে যেতেই পুরুলিয়ায় গড়পঞ্চকোট। শাল, পিয়াল, আর ঘন মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা গড়পঞ্চকোট ছুটির দিনের ভ্রমণের জন্য আদর্শ জায়গা। কলকাতা থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গড়পঞ্চকোট। পাঞ্চেত পাহাড়ের একদিকে পাঞ্চেত বাঁধ আর অন্যদিকে গড়পঞ্চকোট দূর্গের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাবেন।
গড়পঞ্চকোট থেকে ঘুরে নিতে পারেন পাঞ্চেত বাঁধ, বিহারীনাথ পাহাড়, বড়ন্তি পাহাড়, মুরারডি লেক, বিরিঞ্চিনাথের মন্দির, কল্যানেশ্বরী মন্দির ও জয়চন্ডী পাহাড়। সবগুলো জায়গাই গড়পঞ্চকোট থেকে মাত্র ২০-৩০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত।
২) হেরিটেজ StayCation:
ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে কদিন রাজার হালে থাকতে চান? তাহলে রাজবাড়িই হল আপনার একমাত্র গন্তব্য। ঘুরে আসুন ইটাচুনা রাজবাড়ি থেকে, সেখানে রয়েছে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। ইটাচুনা রাজবাড়িতে গিয়ে হোম স্টে করতে চাইলে ইটাচুনা রাজবাড়ির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ঘর বুকিং করতে হবে। ঘরের নাম, ছবি ও মূল্য সবই দেওয়া থাকে।
এমনই রাজকীয়তার স্বাদ পেতে আপনি যেতে পারেন বাওয়ালি রাজবাড়ি, মহিষাদল রাজবাড়ি, কিংবা ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি তেও।
১) গ্রামের বনেদি বাড়ির পুজো:
শহুরে জীবনে হাঁপিয়ে উঠেছেন, গ্রাম গিয়ে ছুটি কাটাবেন? কিন্তু দুর্গাপুজো মিস করতে চান না? তাহলে গ্রামের বনেদি বাড়ির পুজোই আপনার ঠিকানা। গ্রামের দুর্গাপুজো ঘিরেই আপনার এবারের পুজোর ছুটির প্ল্যানিং করে ফেলুন। বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি এমন ট্যুরের আয়োজন করেই থাকে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারও ২০১৯ সালে গ্রামের পুজো দেখার আয়োজন করেছিল। কিন্তু করোনার কারণে গত দুবছর তা বন্ধ ছিল। তাই এবার পর্যটন দপ্তরের ওয়েবসাইটে সজাগ দৃষ্টি রাখুন, সুযোগ পেলেই দেখে আসুন গ্রামের বনেদি বাড়ির পুজো। আবার নিজেরাও ডেস্টিনেশন ঠিক করে নিতে পারেন।
তাহলে আর দেরি না করে আজকেই বুকিং সেরে ফেলুন। বাংলার মুখ দেখেই আনন্দে কাটুক শারদোৎসবের দিনগুলো।