বিন্দু-বিসর্গ জানেন না গাছপালার অধ্যাপক… জিএসটি নিয়ে সুকান্তকে আক্রমণ অমিতের
জিএসটি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চলছে দীর্ঘদিন। রাজ্যের সাফ অভিযোগ বিজেপির সরকারের বঞ্চনার শিকার বাংলা। জিএসটি নিয়ে আসরে নেমেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার ২জুন সাংবাদিক সম্মেলন করে সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন, গুজরাতের তুলনায় বাংলা কেন্দ্রের থেকে জিএসটির ক্ষতিপূরণ বাবদ বেশি টাকা পেয়েছে। তারপরও তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরা কী করে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ করেন তা নিয়ে সওয়াল করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
সুকান্তর এহেন মন্তব্যের জবাবে রাজ্যের অর্থদপ্তরের উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বিজেপি রাজ্য সভাপতির ‘অজ্ঞতা’ নিয়ে তীব্রভাবে সরব হন। ভার্চুয়ালভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে অমিত মিত্রর বলেন, পড়াশোনা না করেই জিএসটি নিয়ে হাস্যকর দাবি করেছেন বটানির অধ্যাপক। এটা তাঁর অজ্ঞতা। কার্যত যুক্তিগ্রাহ্য ও তথ্যনিষ্ঠ প্রমানের মাধ্যমে বাংলার সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের জিএসটি ক্ষতিপূরণের পার্থক্য বুঝিয়ে দেন অমিত মিত্র।
রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথ্য-পরিসংখ্যানসহ দেখান, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজ্যকে জিএসটি ঘাটতি বাবদ ৬৫৯১ কোটি টাকা দিয়েছে মোদী সরকার। অন্যদিকে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক মতো ডবল ইঞ্জিন রাজ্য সাড়ে আট হাজার কোটিরও বেশি টাকা পেয়েছে। অমিত মিত্রের কথায়, তাহলে কেন শুধুমাত্র গুজরাতের সঙ্গেই তুলনা টানা হচ্ছে?
প্রসঙ্গত, অমিত মিত্র জিএসটি কাউন্সিলের অন্যতম উপদেষ্টা। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ীই কাউন্সিলের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। জিএসটি আদায়ের পরিমাণ ১৪ শতাংশের কম হলে, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রকে রাজ্যকে জিএসটি বাবদ অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম দুমাসে বাংলায় ১৯.২৩ শতাংশ জিএসটি আদায় হয়েছে। এসব তথ্যের বিন্দু-বিসর্গ না জেনেই জিএসটি নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি কেন প্রকাশ্যে এমন হাস্যকর মন্তব্য খাড়া করলেন, তা নিয়েও অমিত মিত্র সরব ছিলেন ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে।
জিএসটির ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলার প্রাপ্য টাকা এখনও দিচ্ছে না মোদী সরকার। বাংলা ও বাঙালির স্বার্থে, একজন বাঙালি হিসেবে রাজ্যে পাওনা আদায়ের দাবিতে কেন্দ্রের কাছে সুকান্ত মজুমদারকে সরব হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে জিএসটি চালু হওয়ার পর প্রথম ৫ বছরে জিএসটি খাতে রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক ঘাটতি পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার। সেই অনুযায়ী, এ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের জুলাইয়ে সেই সময়ের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু বিগত ২ বছর করোনা অতিমারির প্রভাবে সমস্ত রাজ্যগুলোই অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। করোনার কারণেই ঠিকমতো জিএসটি আদায় হয়নি।
অমিত মিত্রের দাবি, করোনাকালীন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মানবিক স্বার্থেই মোদী সরকারের উচিত জিএসটি বাবদ ঘাটতি পূরণের মেয়াদ আরও ৫ বছর বাড়িয়ে দেওয়া।