একই সাথে তাপপ্রবাহ, বন্যা! কোন বিপর্যয়ের সম্মুখে মানব সভ্যতা?
কোন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমরা? তাপপ্রবাহ, অতিবৃষ্টি, বন্যা, খড়া, অনাবৃষ্টি। দেশের বিস্তীর্ন অঞ্চল এই মুহূর্তে কোনও না কোনও প্রাকৃতিক বিরূপতার কবলে। আবহাওয়াবিদারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পুরোদমে পড়তে শুরু করেছে।
দিন যত এগোবে, তত প্রকৃতির ভয়াল গ্রাস আরও স্পষ্ট হবে বলেই মত গবেষকদের। সাম্প্রতিক কালে উষ্ণতম মার্চ ও এপ্রিল মাসের অভিজ্ঞতা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে দেশবাসী। এখনও তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের রাজধানী দিল্লিসহ উত্তর ভারতের নানা এলাকা। কেরল ও লাক্ষাদ্বীপে অস্বাভাবিক বেশি বৃষ্টির জেরে কিছু জায়গায় লাল সতর্কতা জারি করতে হয়েছে। পূর্ব ভারতের অসমে ডিমা হাসাও জেলায় হড়পা বানে বিপর্যস্ত। বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। এসব কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এমনটা হচ্ছে। পরিবেশ, প্রকৃতি বিদ্রোহ করছে।
সম্প্রতি দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে ছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ আরও বাড়বে। তথ্য বলছে, মধ্য এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে চলতি বছর এপ্রিলে গত ১২২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের আইপিসিসির রিপোর্ট আগেই জানিয়েছে, সারা পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রাক-শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণেই যে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তা ভাবলে ভুল হবে। এই পরিস্থিতির কারণে বায়ুপ্রবাহের পর্যন্ত তারতম্য হচ্ছে। বায়ুমণ্ডলে নানান পরিবর্তন ঘটছে। আমূল বদলে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গার আবহাওয়া। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কার্বন নিঃসরণ কমানো, বৃক্ষরোপন, পরিবেশবান্ধব উপায়ে নগরায়ণ; না করা গেলে মানব সভ্যতা অচিরেই ধ্বংসের মুখে পড়বে।
হয়ত অচিরেই সত্যি হয়ে যাবে কবি ভরভরা রাওয়ের কবিতার চরণগুলো…
“পারলে তুমি বণিক ডেকে
গোধূলি দাও বেচে
গোদাবরীও শুকিয়ে যাবে
কেউ থাকবে না বেঁচে!”