ফের বঞ্চনার শিকার বাংলা, শীর্ষে থেকেও একশো দিনের কাজে বরাদ্দ পেল না রাজ্য
![](https://drishtibhongi.in/wp-content/uploads/2022/06/100-days-of-work.jpg)
বিগত কয়েক বছর যাবৎ ১০০ দিনের কাজে দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলা। বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকারের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরে এপ্রিলে প্রথম সপ্তাহে বাংলার জন্য ১০০ দিনের কাজে ২৪ কোটি ৪২ লক্ষ ১ হাজার শ্রমদিবস বরাদ্দ করেছিল মোদী সরকার। কিন্তু ফের বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হল বাংলাকে। হঠাৎ করেই ১১ জুন বাংলার জন্য বরাদ্দ শ্রমদিবসের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা হল।
এই ঘটনায় ১০০ দিনের কাজে নিযুক্ত কর্মী-আধিকারিকরা উদ্বিগ্ন। আধিকারিকেরাও জানাচ্ছেন, এমন ঘটনা নজিরবিহীন। এর আগে এমন কখনও ঘটেনি। প্রতিবারেই রাজ্যের বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে কেন্দ্র বাধ্য হয়েছে। বিগত অর্থ বছরে রাজ্যের জন্য ২৭ কোটি শ্রমদিবস বরাদ্দ করা হয়েছিল। যদিও পরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৬ কোটি ৪১ লক্ষ ১৮ হাজারে পৌঁছেছিল। সেক্ষেত্রেও বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছিল বাংলাকে, শ্রমদিবস বাড়লেও টাকা এসে পৌঁছয়নি।
বিগত বছরের ২৬ ডিসেম্বরের পর থেকে ১০০ দিনের কাজ প্রকাল্পের খাতে রাজ্যের জন্য কোন অর্থ বরাদ্দ করেনি মোদী সরকার। এই নিয়ে সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীকে একাধিকবার চিঠিও লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জোরালোভাবে আন্দোলনেও নেমেছে তৃণমূল। ১০০ দিনের কাজে গত অর্থ বছরে মোদী সরকারের কাছে বাংলার পাওনা অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকা। যার একটাকাও দেয়নি কেন্দ্র।
এই পরিস্থিতিতে চলতি অর্থ বছরে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের আওতায় ইতিমধ্যেই ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৭ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। ফলে মোদী সরকারের কাছে রাজ্যের পাওনা অর্থের পরিমাণ ১,৫০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে পাওনা অর্থের পরিমাণ মোট আট হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দ করার আড়াই মাস পরে হঠাৎ করেই রাজ্যের বরাদ্দ শ্রমদিবসের পরিমাণ শূন্য নামিয়ে আনা হল। প্রসঙ্গত, ১০০ দিন কাজ এবং ১৫ দিনের মধ্যে মজুরি পাওয়া জব কার্ড হোল্ডারদের সাংবিধানিক অধিকার।
যদিও এই বঞ্চনার শিকার কেবল বাংলাই! অন্যান্য রাজ্যে বিশেষ করে বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে চলতি আর্থিক বছরের জন্য শ্রমদিবস বরাদ্দ করা হয়েছে। যোগীর উত্তরপ্রদেশে পেয়েছে ২৬ কোটি শ্রমদিবস, মধ্যপ্রদেশে ২০ কোটি, অন্ধ্রপ্রদেশে ১৪ কোটি, বিহারে ১৫ কোটি করে পেয়েছে। কিন্তু বাংলার বরাদ্দের কী কবে হবে? আদৌ বাংলা তা পাবে কি না, তা নিয়ে ঘনিয়েছে অনিশ্চয়তার মেঘ! এমতাবস্থায় ১০০ দিনের কাজে নিযুক্ত রাজ্যবাসীদের বিকল্প কর্মসংস্থান প্রদান করার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।