রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

আইন মেনে বিক্ষোভকারীদের থেকেই সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ আদায় করবে রাজ্য

June 17, 2022 | 2 min read

নবীকে নিয়ে নুপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। যার আঁচ পড়েছিল বাংলাতেও। কদিন আগেই নুপুর ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়েছিল হাওড়াসহ রাজ্যের বেশ কিছু জায়গা। হিংসাত্মক বিক্ষোভের জেরে হাওড়া ও রাজ্যের একাধিক জায়গায় বহু সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। যারা সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছে, ইতিমধ্যেই তাদের চিহ্নিত করেছে রাজ্য। এবার তাদের থেকে ওই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের ক্ষতিপূরণ আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।

সূত্রের খবর চিহ্নিতকরণের জন্য ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করা শুরু করেছিলে পুলিশ প্রশাসন। কোন কারণে যদি দুষ্কৃতী ও মূল চক্রান্তকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে যে এলাকায় ধ্বংসাত্মক বিক্ষোভ চালানো হয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হতে পারে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন জানানো এমনটাই জানানো হয়েছে বলেই খবর মিলেছে। 

দিন দিন বিক্ষোভের নামে সরকারি এবং বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার প্রবণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এমন হলে ক্ষতিপূরণ কে দেবে, বিক্ষোভকারীদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট আইন নেই দেশে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত অন্ধ্রপ্রদেশের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে একটি নির্দেশিকা তৈরি করে দিয়েছিল। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, সরকারি, বেসরকারি সূত্র থেকে ধ্বংসাত্মক বিক্ষোভের ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করতে হবে। ফলে বিক্ষোভকারী তথা ধ্বংসকারীদের সঙ্গে মূল চক্রান্তকারীদের চিহ্নিত করা যায়। যার ফলে তাদের বিরুদ্ধে সহজেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।

অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টকে জানান, সেই নির্দেশিকা মেনেই ২০১৭ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেইনটেন্যান্স অব পাবলিক অর্ডার অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট তৈরি করা হয়েছে। আইন অনুসারে, ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের জন্য কী কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে তা বেঞ্চকে জানানো হয়। বেআইনিভাবে জমায়েত করা থেকে শুরু করে ধ্বংসাত্মক তান্ডবলীলা চালানো, সব ক্ষেত্রেই রাজ্য আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ নিতে পারবে।

ওই আইন অনুসারে, তদন্তের প্রয়োজনে সরকার যদি মনে করে, কোন অঞ্চলের বাসিন্দারা ধ্বংসাত্মক বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছেন, প্ররোচনা দিয়েছেন, তাহলে সরকার গেজেটে তা প্রকাশ করতে পারবে। তার ভিত্তিতেই ওই এলকার বাসিন্দাদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারবে রাজ্য। এই ক্ষতিপূরণ আদায়ের সিদ্ধান্ত ওই এলাকায় ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে বা অন্য কোনভাবে জানানো হবে। কেউ নিমরাজি থাকলে সঙ্গত যুক্তিসহ প্রশাসনের কাছে তার আপত্তি জানাতে পারবেন, সে পথও খোলা থাকছে। যাদের নিজেদেরও ক্ষতি হয়েছে, তাদের জন্য ক্ষতিপূরণে ছাড় দেবে সরকার। কোন ক্ষতিগ্রস্তদের কত ক্ষতিপূরণ পাওয়া উচিত, তাও নির্ধারণ করবে সরকার। সংগৃহীত ক্ষতিপূরণে থেকে যা ক্ষতিগ্রস্তদের প্রদান করবে সরকার।

অন্যদিকে, আবারও নতুন করে উত্তেজনার আশঙ্কার মামলার প্রেক্ষিতে বেঞ্চ জানিয়েছে, সরকারকে পরিস্থিতি আগাম খতিয়ে দেখতে হবে। কোনরকম অনভিপ্রেত বা অপ্রীতিকর কিছু ঘটনার আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য পুলিশ-প্রশাসনকে সচেতনা ও সতর্ক থাকতে হবে। তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে প্রাণহানি ও সম্পদহানি রুখতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দায়িত্ব দিতে হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Nupur Sharma, #Nupur Sharma comment row, #West Bengal

আরো দেখুন