টানা বর্ষণে ফুঁসছে উত্তবঙ্গের নদীগুলি, বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টিতে নাজেহাল মানুষ। পাহাড়ে চলছে লাগাতার বৃষ্টি আর তার জেরে জলপাইগুড়িতে ফুঁসছে তিস্তা। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে হলুদ সঙ্কেত জারি রয়েছে তিস্তা ব্যারেজ থেকে বাংলাদেশের দিকে সংরক্ষিত ও অসংরক্ষিত এলাকায়। এনএইচ ৩১ থেকে মাথাভাঙা পর্যন্ত জলঢাকা নদীর দু’পারেও অব্যাহত রয়েছে হলুদ সঙ্কেত। সেচদপ্তর হলুদ সঙ্কেত জারি করেছে মাথাভাঙার মানসাই নদীর অসংরক্ষিত এলাকায়।
উত্তরবঙ্গের চলছে টানা বর্ষণ। ফলে জলস্তর বাড়ছে নদীগুলির । ইতিমধ্যেই নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে মাইকিং করা শুরু হয়েছে। প্রশাসনও নিজেদের মতো করে ত্রাণসামগ্রী মজুত থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় শিলিগুড়িতে ১১৬.৬০, কার্শিয়াংয়ে ২৭.১, মিরিকে ১৮.২, দার্জিলিংয়ে ১৩, আলিপুরদুয়ারে ২০৬.২০, হাসিমারায় ২১৫.৪০, জলপাইগুড়ি শহর ও সংলগ্ন এলাকায় ৭২.৫০, মালবাজারে ৮২.২০, বানারহাটে ২১৩.০০, ময়নাগুড়িতে ৭৯.০০ এবং মাথাভাঙায় ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
ভারী বৃষ্টির জেরে শিলিগুড়ি মহকুমার বেশকিছু এলাকায় জলবন্দি। মাটিগাড়া ব্লকের রঙ্গিয়া জোত, জিতুজোত, ভৈরাটিশাল, বান্দ্রিজোত প্রভৃতি এলাকায় বৃষ্টির জল দাঁড়িয়ে আছে।
ভারী বৃষ্টির জেরে আলিপুরদুয়ার জেলার সোনাপুর ও ফালাকাটার মাঝে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে বুড়ি তোর্সা, চর তোর্সা ও সঞ্জয় নদীর অস্থায়ী ডাইভারশন ভেসে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে আলিপুরদুয়ার ও ফলাকাটার মধ্যে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আলিপুরদুয়ার থেকে সমস্ত যানবাহন পুণ্ডিবাড়ি ও ঘোকসাডাঙা দিয়ে ঘুরপথে ফালাকাটায় যাচ্ছে।
একইভাবে বিরগিটি নদীর জলের তোড়ে ফালাকাটার ভুটনিরঘাটে ফালাকাটা-ধূপগুড়ি ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি কালভার্ট ধসে গিয়েছে। ফলে ফালাকাটা ও ধূপগুড়ির মধ্যেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে সন্ধ্যা ৬টায় জল ছাড়া হয় ১৪২৭ কিউমেক। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মালবাজার, ক্রান্তি, ধূপগুড়ি, বানারহাট, দোমোহনি সহ কয়েকটি জায়গায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সেই জায়গাগুলিতে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনে দুর্গতদের ফ্লাড শেল্টারে সরানো হবে।