দেশ বিভাগে ফিরে যান

জ্বলছে দেশ, নিরোর মতোই নিরুত্তর মোদী

June 18, 2022 | 2 min read

রোম যখন পুড়ছে, তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন সম্রাট নিরো। ২০২২-এ অগ্নিপথ আন্দোলনে জ্বলছে গোটা দেশ। পুড়ছে ট্রেন। ইতিমধ্যেই পরপর দুদিনে চলে গিয়েছে দুজনের প্রাণ। আহত অগুণিত। বিক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছে। মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছাত্র-যুবদের বিদ্রোহের মুখে পড়েও মোদী একটি বাক্যও খরচ করেননি। ​​বিজেপি সরকারও নিজের তুঘলকি সিদ্ধান্তে অনড়।

বিজেপি সরকার ১৪ জুন ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে। আদপে বিজেপি সেনাবাহিনীতে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ চালু করতে চাইছে। এই অস্থায়ী নিয়োগের প্রতিবাদে উত্তর থেকে দক্ষিণ, ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আগুন। কিন্তু আমজনতার তীব্র প্রতিবাদের পরেও মোদী সরকার অনড়। সামরিকবাহিনীর তিন প্রধানকে দিয়েও প্রকল্পের স্তুতি করানো হয়েছে। অগ্নিপথকে শুভ উদ্যোগ বলছেন তারা। শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও জানানো হচ্ছে। সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডের দাবি, দুদিনের মধ্যেই নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পাবে। ডিসেম্বরে প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার কথাও জানা যাচ্ছে। এয়ার চিফ মার্শাল ভি আর চৌধুরীর দাবি, বায়ুসেনা আগামী ২৪ জুন থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবে। বিজেপি সরকারের নেতা মন্ত্রীরাও পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে আসরে নেমেছেন কিন্তু আন্দোলনের আগুন নিভছে না কিছুতেই।

দেশের ১২টি রাজ্য উত্তপ্ত, আঁচ পড়েছে বাংলাতেও। বিহার, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশে অসংখ্য ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। রাস্তা-রেল অবরোধে স্তব্ধ। মেট্রো, সরকারি ভবন, থানাকেও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। বিহারে উপমুখ্যমন্ত্রীর বাড়িও ছাড় পায়নি। ১৫ জুন প্রথমে বিহার থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। ১৬ তারিখ তা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ভারতে। ১৭ তারিখ দাক্ষিণাত্যের হায়দ্রাবাদে পৌঁছল ক্ষোভের আগুন। সেকেন্দ্রবাদ স্টেশনে আরপিএফের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে জনৈক রাজেশের। ওয়ারাঙ্গলের ১৯ বছরের এক কিশোরের মৃত্যুতে প্রথম রক্তাক্ত হল অগ্নিপথ আন্দোলন।

রাজধানীর সাউথ ব্লক ও নর্থ ব্লককে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলতে দিল্লির একের পর এক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ভারতের রেল পরিষেবাও বিপর্যস্ত। প্রায় ৩১৬টি ট্রেন কিংবা হয়েছে। কিছু ট্রেনের রুট বদলে দেওয়া হয়েছে। ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্য বৃহস্পতিবার ১৬ জুন গভীর রাতে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছিল মোদী সরকার। ২১এর বদলে, ২৩ বছর বয়সীদের ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পে আবেদন করার কথা বলা হয়। যদিও তা কেবল চলতি বছরের জন্যই লাগু হবে। কিন্তু লাভ হয়নি। আন্দোলনকারীরা সেনাবাহিনীতে স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে অনড়।

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আর কতদিন অনড় থাকবে মোদী সরকারের? প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিল সংশোধনী, তিন কৃষি আইন প্রতি ক্ষেত্রেই পিছু হেঁটে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে মোদী সরকার, তবে কি প্রত্যাহারের তালিকায় নবতম সংযোজন হতে চলেছে অগ্নিপথ? নাকি জেদ বজায় রাখবে বিজেপি? যদিও ২৪-এর প্রাককালে অগ্নিপথ আন্দোলনকে দেশের প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #Agnipath, #Agnipath Scheme, #Agnipath protest

আরো দেখুন