সচল রাজ্যের অর্থনীতি, ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানের নিরিখে দেশের সেরা বাংলা
মোদী আমলে ক্রমশ রুগ্ন হয়ে পড়ছে দেশের অর্থনীতি। সেখানেই ব্যতিক্রম বাংলা, অতিমারিতেও এগিয়ে বাংলার অর্থনীতির চাকা। দেশে ব্যাঙ্ক ঋণ নেওয়া প্রবণতা কমতে কমতে একেবারেই তলানিতে। সেখানে ক্ষুদ্র ঋণের ক্ষেত্রে উলোট পুরান। প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণ নেওয়ার প্রবণতা। দেশের মধ্যেই বাংলাতেই সেই পরিমাণ সর্বাধিক।
এখনও বহু এলাকায় ঠিক মতো ব্যাঙ্কিং পরিষেবা মেলে না। আর ঋণ নিতে গেলে তো প্রশ্নে প্রশ্নে জেরবার আমজনতা। হাজারটা শর্ত, চুক্তির দাপটে বিপর্যস্ত ঋণপ্রার্থী। সেখানেই অনেক সহজে মিলছে ক্ষুদ্র ঋণ, এই সহজলভ্যতাই ক্ষুদ্র ঋণের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলোর সংগঠন মাইক্রোফিনান্স ইনস্টিটিউশন নেটওয়ার্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিটি বঙ্গবাসীর মাথায় গড়ে ৫৩,৭০৮ টাকা করে ঋণ রয়েছে। যা দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে সর্বাধিক। দ্বিতীয় স্থানেই কেরল, সে রাজ্যে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ৪৬,০৭৪ টাকা। এমফিনের সিইও এবং ডিরেক্টর অলোক মিশ্রের কথায়, ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিক থেকেই ক্ষুদ্র ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। চতুর্থ ত্রৈমাসিক তা দ্রুত হারে বাড়তে শুরু করে। বকেয়া অনাদায়ী ঋণ আদায়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ঋণ শোধের ক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। সংস্থাগুলোর কথায় করোনাকালীন লকডাউনের পরে যখন পরিশোধের পরিমাণ ৬০-৬৫ শতাংশে নেমে এসেছিল। এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে ৯৬-৯৭ শতাংশে পৌঁছেছে। এখন মাইক্রোফিনান্সগুলির লক্ষ্য ঋণ দেওয়ার পরিমাণ প্রায় ২০০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া।
করোনার দাপট কমতেই গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা আয়ের পথের হদিশ করেছেন। অনেক জায়গাতেই ব্যাঙ্কিং সুযোগ-সুবিধা অপ্রতুল। তাই ঋণের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলির কাছে পৌঁছচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রয়োজন মতো ঋণ মেলায় তারাও ভিড় বাড়াচ্ছেন। দেশে বেকারত্ব সর্বকালীন শীর্ষে, করোনার চাপে গ্রামীণ অর্থনীতিও টলমলে। করোনা পরবর্তী সময় অনেকেই উপার্জনের পথ খুঁজছেন, শেষ হতে বসা ব্যবসাকে বাঁচাতে চাইছেন কেউ কেউ। কিন্তু সমস্যা সেই মূলধন, ব্যাঙ্ক যা দিতে হাজারও নিয়ম দেখাচ্ছে, সহজ সরলভাবে প্রয়োজনীয় টাকাই মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা।