অতিমারির ধাক্কায় মিলছে না কাজ, গত সপ্তাহে শীর্ষে দেশের বেকারত্বের হার
অতিমারির ধাক্কায় বেহাল অর্থনীতি। কাজের বাজারে চরম মন্দা। অতিমারিতে চলে যাওয়া কাজ ফেরেনি, বাড়ছে বেকারত্ব। নতুন কর্মসংস্থানের কোন লক্ষণ নেই। সিএমআইইয়ের পরিসংখ্যান বলছে শেষ সপ্তাহে দেশেজুড়ে মাথাচাড়া দিয়েছে বেকারত্ব। যে বেকারত্বের হার তার আগের সপ্তাহে ৭.১৪ শতাংশ ছিল। বিগত সপ্তাহে সেই হার ৮.৪৯ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। সার্বিকভাবে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ৬.৭১ থেকে বেড়ে ৭.৭৬ শতাংশে গিয়ে পৌঁছেছে। অন্যদিকে গ্রামে ৭.৩৪% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৮.৮২% হয়েছে।
করোনার কারণে লকডাউনের ফলে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্র থমকে গিয়েছিল। সংগঠিত ক্ষেত্রেও অনেকের কাজ চলে যায়। ২০২০-এর এপ্রিল-মে মাসে দেশের বেকারত্বের হার ২০ শতাংশের গণ্ডি পার করে ফেলেছিল। অতিমারি স্তিমিত হয়ে এলেও মানুষের কাজ ফেরেনি।
অতিমারির দাপট কমলে সংস্থাগুলিতে লোক নিয়োগের পরিমাণ বাড়ার সম্ভাবনা দেখেছিলেন কেউ কেউ, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। অন্যদিকে মোদী সরকার গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম উৎস ১০০ দিনের কাজে বরাদ্দ কমিয়েছে বাজেটে। ফলে গ্রামীণ কর্মসংস্থান কমেছে।
দেশের চেম্বার অব কমার্সের ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট সীতারাম শর্মা এই ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের জন্য কেন্দ্র সরকার ও বেসরকারি ক্ষেত্রে উভয় পক্ষকেই দোষী করেছেন। মোদী সরকার সুদের হার বাড়ানোয় শিল্পের মূলধন খরচ বাড়ছে। নতুন প্রকল্পে লগ্নি বা পুরনো প্রকল্প সম্প্রসারণ কোনটাই করছে না সরকার। নিয়োগ কার্যত বন্ধ। তিনি মোদী সরকারের উদাসীনতাকেই এই পরিস্থিতির জন্য কাঠগোড়ায় তুলেছেন। প্রতিরক্ষা, রেল এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি একদা দেশের কর্মসংস্থানের অন্যতম মাধ্যম ছিল। কিন্তু হাল আমলে তা দ্রুত গতিতে কমেছে। বহু সংস্থার বিলোপ ঘটিয়েছে বিজেপি সরকার।
আইআইএম কলকাতার প্রাক্তন অধ্যাপক অনুপ সিনহার কথায়, অতিমারি চলাকালীন বহু সংস্থাই কর্মী সংখ্যা কমিয়ে কাজ চালানোর পথে হেঁটে ছিল। সংস্থাগুলিতে শ্রমিকদের বিকল্প হিসেবে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। সেই কারণেই আর নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না। চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগের বদলে কম সময়ের জন্য নিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে। অতিমারি চলাকালীন একটা সময়ে বহু মানুষ হতাশায় কাজের অনুসন্ধান করা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারা ফের কাজে ফিরতে চাইলেও মিলছে না কাজ।