জুবেরকে গ্রেপ্তার করতে ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে?
ভাগ্যিস হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় বেঁচে নেই, থাকলে হয়ত সিনেমার তাঁকেও গারদে পুরতেন মোদী। ১৯৮৩ সালে তৈরি এক ছবির দৃশ্য নিয়ে ২০১৮ সালে করা একটি টুইটের ভিত্তিতে ২০২২ সালে অল্ট নিউজের সহপ্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একদিকে মোদী বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতের বাক স্বাধীনতা নিয়ে গলা ফাটান আর অন্যদিকে তার দেশে বিন্দুমাত্র স্বাধীনতা নেই সাংবাদিকদের। সরকারের রোষানলে পড়লে সাংবাদিকদের জোটে কারাবাস।
সম্পূর্ণ এক উদ্ভট অভিযোগের ভিত্তিতে জুবেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বোঝাই যায় বিজেপি দিল্লি পুলিশকে কাঁচা হাতে গল্প লিখে দিয়েছে। সেই অনুযায়ীই ঘটনাক্রম সাজিয়েছে অমিত শাহের পুলিশ। হনুমান ভক্ত @balajikijaiin নামের একটি টুইটার হ্যান্ডেল থেকে জুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। গতকাল পর্যন্ত @balajikijaiin টুইটার প্রোফাইলটিতে মাত্র একজন ফলোয়ার ছিল। বিগত ফেব্রুয়ারিতে ওই টুইটার হ্যান্ডেল থেকে সাইনপোস্ট ইন্ডিয়া নামক একটি কোম্পানির পোস্ট লাইক করা হয়েছে।
এখানে স্পষ্ট হয়েছে, গোটা ঘটনার সঙ্গে বিজেপির যোগ। সাইনপোস্ট কোম্পানিটির ঠিকানা ২০২, প্রেসমান হাউস, মুম্বই, এরা আদপে একটি সোশ্যাল মিডিয়া এজেন্সি। এরা বিজেপির সঙ্গেই কাজ করে। বিজেপির যুব শাখার আইটিসেলের প্রধান দেবাং দেব সাইনপোস্ট সংস্থাটির কর্ণধার। ওই একই ঠিকানায় আরও একটি এজেন্সিরও অফিস রয়েছে।
কদিন আগেই বিজেপির টেকফগ কেলেঙ্কারির কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। বিজেপি টেকফগ অ্যাপের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় হোয়াটস্যাপ অ্যাকাউন্ট, টুইটার হ্যান্ডেল গুলোকে ব্যবহার করে ভুয়ো খবর তৈরি করত, এমনকি নিজেদের অনুকূলে মেকি জনমতও তৈরি করত বিজেপি। সেই টেকফগ কেলেঙ্কারির মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সাইনপোস্টের কর্ণধার দেবাং দেব।
বলাইবাহুল্য, বিজেপির আইটি সেলের প্রধান তথা টেকফগ কেলেঙ্কারির নায়ক দেবাং @balajikijaiin ভুয়ো অ্যাকাউন্টটি তৈরি করেছে এবং ওই টুইটার হ্যান্ডেলটি ব্যবহার করেই জুবেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। জুবেরকে ফাঁসাতেই ইচ্ছা করে এমনটা করেছে বিজেপি। অমিত শাহের পুলিশের মদতেই বিজেপি জুবেরের বিরুদ্ধে কেস সাজিয়েছে।