মমতার সামাজিক প্রকল্পেই আস্থা মানুষের, বলছে অমর্ত্য সেনের সংস্থার সমীক্ষা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলির ওপর অটল আস্থা বাংলার মানুষের। অমর্ত্য সেনের সংস্থা প্রতীচী ট্রাস্টের সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। করোনা অতিমারি এবং পরবর্তী সময়ে সরকারি প্রকল্পের উপরই ভরসা রেখেছে রাজ্যের মানুষ। তাদের সমীক্ষায় সরকারি স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, গণবণ্টন ব্যবস্থা বা কর্মসংস্থান সুরক্ষা নীতিতে জনতার আস্থার ছবিই উঠে এসেছে।
প্রতীচী ট্রাস্টের মতে, করোনার জেরে প্রচণ্ড দুর্দশার মুখে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। করোনা হয়ে উঠেছে প্রকৃত আর্থ-সামাজিক অতিমারি। সংস্থার ‘স্টোয়িং অ্যালাইভ’ শীর্ষক রিপোর্ট উঠে এসেছে, এ দেশে অতিমারির প্রথম ঢেউ (২০২০ সালের জুলাই-ডিসেম্বর) চলাকালীন এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাক্কালে (২০২১-এর গোড়ায়) পশ্চিমবঙ্গে নানা ভাবে ভুক্তভোগী দু’হাজার পরিবারের কথা।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই সঙ্কটের মুহূর্তেও গড়ে মোট ২৩ দিন কাজ দিতে পরেছে রাজ্য সরকার। তবে কেন্দ্রের টাকা আসতে দেরিও এই কাজ দিতে না পারার সম্ভাব্য কারণ। সঙ্কটকালে রাজ্যের গণবণ্টন প্রকল্পও দারিদ্রতমদের চাল জুগিয়েছে।
এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে রাজ্যের আশাকর্মী এবং সহযোগী স্বাস্থ্য-সেবিকাদের ‘বীরগাথা’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিভিন্ন সময় গর্ব করতে শোনা যায় রাজ্যের আশাকর্মীদের নিয়ে। বিভিন্ন জনসভা থেকে তিনি তাঁদের কাজের প্রশংসা করে থাকেন। প্রতীচী ট্রাস্টের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘সামান্য স্বেচ্ছাসেবী’ বলে ধরা হলেও, পাকা স্বাস্থ্যকর্তাদের মতো করেই তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট নিভৃতবাস কেন্দ্র চালিয়েছিলেন।
এই স্বাস্থ্যকর্মীদের লকডাউনে ‘ছুটি’ ছিল না। তাঁরা কখনও ঝুঁকি নিয়ে কোভিড সংক্রমণ জরিপ করেছেন, কখনও বাড়ি-বাড়ি ঘুরে কোমর্ডিবিটি চিহ্নিত করেছেন। আবার লকডাউন পরে টিকার লক্ষ্যপূরণে সচেষ্ট হয়েছেন। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, এক এক জন আশাকর্মী ১,৮৯৮ জন রাজ্যবাসীর দায়িত্বে ছিলেন। দিনে ১৩ ঘণ্টাও কাজ করেছেন।
করোনাকালের কঠিন পরিস্থিতিতে মাত্র দু’টি ক্ষেত্রে বাড়িতে প্রসবের নমুনা মিলেছে। অর্থাৎ, সার্বিক ভাবে নারী ও সদ্যোজাতদের স্বাস্থ্যে বড়সড় ত্রুটি ঘটতে দেননি ‘নিচুতলার’ স্বাস্থকর্মীরা। অমর্ত্য সেনকে উদ্ধৃত করে এই রিপোর্টে বলছে, ‘‘এই সঙ্কট পর্ব সামাজিক সংহতির দলিল।’’