বর্বরতার সাক্ষী থাকল বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ, পুড়িয়ে মারার চেষ্টা আদিবাসী মহিলাকে
আবারও মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী থাকল বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ। ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলোতে আইন শৃঙ্খলা একেবারেই তলানিতে, সেই সঙ্গে চলে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার। জমি দখলে বাধা দেওয়ায় শাস্তি স্বরূপ মধ্যপ্রদেশে এক আদিবাসী মহিলার গায়ে ডিজেল ঢেলে আগুন দিয়ে দেওয়া হল। জমি বাঁচানোর শাস্তি হল পুড়িয়ে মারার চেষ্টা। ঘটনাটি ঘটেছে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলায়। সামাজিক মাধ্যমজুড়ে ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে বিস্তীর্ণ খেতের মধ্যে জ্বলছেন এক মহিলা। প্রাণে বাঁচার জন্য চিৎকার করছেন ওই মহিলা। তার মধ্যে অভিযুক্তরা ভিডিও রেকর্ড করছে। ভিডিওতে অভিযুক্তদের বলতে শোনা যায়, ওই মহিলা নিজেই গায়ে আগুন দিয়েছেন প্রমাণ করতেই তারা ভিডিও রেকর্ড করে রাখছেন। গোটা ঘটনাকে আত্মহত্যার চেষ্টা হিসেবে প্রমাণ করবেই, ভিডিওতে অভিযুক্তদের এই দাবি করতেও শোনা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, ৩৮ বছর বয়সী জনৈক রামপেয়ারি বাই অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর লড়াই করছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনজনের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন অতি ক্ষুদ্র উপজাতি গোষ্ঠীভূক্ত ওই মহিলার দেহের ৮০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে। বর্বরোচিত ঘটনার নিন্দায় সরব তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে বিজেপি নীরব দর্শক। তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের টুইটে লেখেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার অবস্থা বেহাল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে কী অগ্রাধিকার পায়, এই ঘটনা থেকেই তা স্পষ্ট! এই ধরনের ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে বিজেপির ধারাবাহিকভাবে মুখে কুলুপ এঁটে রাখা লজ্জাজনক।
এই ঘটনায় অভিযুক্তেরা সবাই বিজেপি কর্মী বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। পুলিস সুপার পঙ্কজ শ্রীবাস্তব জানান, গত ২ জুলাই বামোরি থানা এলাকার ধানোরিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই মহিলাকে মাঠের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। আক্রান্ত ওই মহিলাই চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, ডিজেল ঢেলে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। জেলা হাসপাতাল থেকে তাকে ভোপালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আক্রান্তের পরিবার ইতিমধ্যেই গ্রামের কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন।
ওই এফআইআরের ভিত্তিতে পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। খেতের মধ্যে রামপেয়ারিকে জ্বলন্ত অবস্থায় দেখে ছুটে আসেন তার স্বামী অর্জুন। অর্জুন পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই সময় তিনি তিন অভিযুক্ত অর্থাৎ প্রতাপ, হনুমত ও শ্যাম কিরারকে সপরিবারে ট্রাক্টর করে চলে যেতে দেখেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা অর্জুনের ছয় বিঘা জমি জবর দখল করে নিয়েছিল। তারপরেই গত ২৩ জুন পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অর্জুন। তাকে হুমকিও দিয়েছিল অভিযুক্তরা। জমি ফিরে পান অর্জুন। সেই আক্রোশ থেকে অভিযুক্তরা এ ঘটনা ঘটালেন বলে অনুমান।