গ্যাসের দাম হওয়া উচিত ৮০০ টাকা, সাধারণ মানুষকে লুঠ করছে মোদী সরকার
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। রান্নার গ্যাস মহার্ঘ্যে পরিণত হয়েছে। গ্যাসে দাম নিয়ে মুখে কুলুপ দিয়েছে মোদী সরকার। কলকাতায় চলতি মাসে রান্নার গ্যাসের দাম হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে ১,০২৯ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসে পরপর দু’বার রান্নার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে মোদী সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি তৈরির অন্যতম মূল দুই উপাদান প্রোপেন ও বিউটেনের দাম কমলেও, গ্যাসের দামে কমায়নি মোদী সরকার। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, যে হারে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম হ্রাস পেয়েছে, সেক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ৮০০ টাকা হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষের উপরে বোঝা চাপিয়ে লাভের ফসল তুলছে মোদী সরকার।
মোদী দাবি, রান্নার গ্যাসের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের উপর নির্ভর করে। প্রতি মাসের গোড়ায় ‘কন্ট্র্যাক্ট প্রাইস’ ঘোষণা করে পৃথিবীর অন্যতম বৃহওম তেল সংস্থা সৌদি অ্যারামকো। তারা প্রোপেন ও বিউটেনের মূল্য যা ঘোষণা করে, সেই মতো ভারতে রান্না গ্যাসের দাম নির্ধারিত হয়।
মে মাসে প্রতি টন প্রোপেনের দাম ৮৫০ ডলার। যা এপ্রিলের তুলনায় প্রায় ৯০ ডলার কম। এপ্রিলের তুলনায় প্রায় ১০০ ডলার কমে বিউটেনের দাম মে মাসে টন প্রতি ৮৬০ ডলারে পৌঁছেছিল। যদিও দাম কমার সুফল মেলেনি। দাম কমা সত্ত্বেও মে মাসে ভারতে রান্নার গ্যাসের দাম কমেনি। উল্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। জুনেও প্রোপেন ও বিউটেনের দাম যথাক্রমে ১০০ ও ১১০ ডলার করে হ্রাস পেয়েছিল। জুলাইতেও টন প্রতি ২৫ ডলার করে দাম কমেছে। যদিও গ্যাসের দাম একটাকাও কমায়নি মোদী সরকার।
আন্তর্জাতিক বাজারের দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এদেশে এলপিজির দাম কমা উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। চলতি বছরের বিগত তিন মাসে কাঁচামালের দাম ১০০ ডলার হ্রাস পেয়ে ২১৫ থেকে ২৩৫ ডলার হয়েছে। সেই অনুযায়ী, সিলিন্ডারের দাম ২০০ টাকারও বেশি কমা উচিত। অঙ্কের হিসেবে তাই বলে। ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রোপেন ও বিউটেনের টন পিছু দাম ছিল যথাক্রমে ৮৭০ ও ৮৩০ ডলার। সেই কারণেই বিগত বছরের ডিসেম্বরে এদেশে সিলিন্ডারের দাম ৯২৬ টাকা হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের জুনে ওই দুই কাঁচামালের দাম কমে ৭২৫ ডলারে নেমেছিল। কিন্তু তখন সিলিন্ডারের দাম ১০০০ পেরিয়েছে। কাঁচামালের দাম কমার পরেও এদেশে ১,০২৯ টাকায় বিকোচ্ছে রান্না গ্যাস! যুক্তিতে এর উত্তর মেলে না।