বাংলায় করোনার দাপটের মেয়াদ আর এক সপ্তাহ! তারপরেই কমবে সংক্রমণ?
ফের চোখে রাঙাচ্ছে করোনা। তবে বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন করোনার এই লাফালাফির আয়ু নাকি আর ৭ দিন। তারপরেই মাথা নোয়াবে সংক্রমণ? শনিবার ৯ জুলাই রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞরা এমনটাই দাবি করছেন।
তাদের মতে, জুলাই মাসের ১৪-১৫ তারিখ পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন। সেই সময়েই শীর্ষে পৌঁছবে চলতি ঢেউ। ফের ধাপে ধাপে কমতে শুরু করবে সংক্রমণের দাপট।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও মহামারীবিদেরা দু-বছর যাবৎ কোন নির্দিষ্ট এলাকার ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের ঢেউয়ের স্থায়িত্বের পরিমাণ জানতে এক বিশেষ গাণিতিক মডেলের আশ্রয় নেন। স্বাস্থ্যভবনও সেই মডেল ব্যবহার করছে। নির্দিষ্ট এলাকার R ভ্যালু অর্থাৎ সংক্রমণ হার, ওই এলাকায় সুস্থতার হার, এলাকার মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ টিকা নিয়েছেন এবং টিকার কার্যক্ষমতার বিশ্লেষণের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণের কোন একটি ঢেউয়ের স্থায়িত্বের মেয়েদা নির্ধারণ করা হয়। সেই মডেল অনুযায়ী, স্বাস্থ্যভবনের বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন রাজ্য চলতি ঢেউয়ের মেয়াদ আর দিন সাতেক বজায় থাকতে পারে।
চতুর্থ সেন্টিনেল সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলায় মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশেরও বেশি টিকা নেওয়া মানুষের দেহে টিকা কার্যকরী। তবে এই পরিমাণ পঞ্চম সেন্টিনেল রিপোর্টে হয়ত কিছুটা কমতে পারে। টিকা নেওয়ার পরে অনেকেরই ছয়মাস সময় অতিক্রান্ত, ফলে কিছুটা হলেও ভ্যাক্সিনের কার্যকারীতা কমে গিয়েছে। কিন্তু ৭০ শতাংশও নেহাত কম নয়। তারা তো করোনার ভয়ানক প্রকোপ থেকে রেহাই পাবেন।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে করোনা সংক্রমণের এক একটি ঢেউয়ের স্থায়িত্বের মেয়াদ খুব বেশি হলেও দেড় মাস অর্থাৎ ৬ সপ্তাহ হতে পারে। বাংলায় করোনার চলতি তরঙ্গ মোটামুটি জুনের শুরু থেকেই আরম্ভ হয়েছিল। সেক্ষেত্রে অঙ্কের হিসেব বলে জুলাই মাসের মাঝামাঝি চলতি ঢেউয়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। ২০২০ সালের মার্চ থেকে করোনার একের পর এক তরঙ্গ এসেছে। তবে এই চলতি তরঙ্গেই রোগীর হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যু; দুটোর সংখ্যাই কম। পূর্ববর্তী ঢেউগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। ধরে নেওয়া যায়, আগামী সপ্তাহ থেকেই ক্রমশ স্তিমিত হতে শুরু করবে করোনার দাপট।