হিসেবে গড়মিল, ঋণে জর্জরিত রাজ্য বিজেপির মাসোহারা বন্ধ করল দিল্লি?
একুশের ভোটের মতোই হিসেবের অঙ্ক মিলাতেও নাকি ডাহা ফেল রাজ্য বিজেপি! শোনা যাচ্ছে, দিল্লি বিজেপির পাঠানো টাকার কোন হিসেবই দিতে পারছে না বাংলা বিজেপি। আর সে কারণেই কি রাজ্য বিজেপির মাসোহারা বন্ধের পথেই হাঁটল দিল্লি। জানা গিয়েছে, জেলা পার্টি অফিস নির্মাণের জন্য দিল্লি থেকে বাংলায় যে টাকা পাঠানো হয়েছিল তারও হিসেবে দিতে পারছে না বঙ্গ বিজেপি। এছাড়াও নাকি দিল্লির নেতাদের চোখে রাজ্য বিজেপির একাধিক খাতে কোটি কোটি টাকার গড়মিল ধরা পড়েছে।
অর্থাভাবে রাজ্য বিজেপির অবস্থা একেবারেই করুন। জেলার শাখাগুলিকে কোন টাকাই দিতে পারছে না বঙ্গ বিজেপি। পাওনাদাররা নিত্যদিন বিজেপির রাজ্য দপ্তরের এসে কড়া নাড়ছেন। বিজেপি সভাপতি নাড্ডার রাজ্য সফরের টাকা এখনও বকেয়া। সফরের একাধিক খাতের খরচ পূরণ করতে পারেনি রাজ্য। রাজারহাটের হোটেলের বিল থেকে ন্যাশনাল লাইব্রেরির অনুষ্ঠানের খাবারের দায়িত্বে থাকা ক্যাটারার কেউই আজ অবধি এক টাকাও পাননি। সবই বাকিতে হয়েছে!
বঙ্গ বিজেপির একাধিক শাখা ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ টাকার বাকি বিল রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা দিয়েছে, বলেও খবর। কিন্তু কোষাগার ফাঁকা! তাই একটি বিলও পরিশোধ করা হয়নি। এমনকি নেতাদের গাড়ির বিল, চালকদের বেতন পর্যন্ত বাকি। কিন্তু দিল্লি থেকে কানাকড়িরও দেখা নেই। প্রমাদ গুনছেন রাজ্যের নেতারা।
কিন্তু এর মধ্যেই কেউ কেউ ফায়দা তুলে নিচ্ছেন। বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, বিজেপির অন্দরে তৃণমূল থেকে আসা এক নেতার প্রভাব বিস্তর বেড়েছে। নামে বেনামে বিপুল সম্পত্তির মালিক ওই নেতা এখন টাকার যোগান দিয়ে যাচ্ছেন। রাজ্য বিজেপির একদল নেতৃত্বের কাছে তিনিই ত্রাতা মধুসূদন। বর্তমানে তিনি বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের গৌরি সেন, ফলে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ওই দল পাল্টানো নেতার মতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বঙ্গ বিজেপি।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় জলের মতো টাকা খরচ করেছে দিল্লি। কিন্তু এই মুহূর্তে শোনা যাচ্ছে সেই বিপুল অঙ্কের টাকার আর হিসেব দিতে পারছে না রাজ্য বিজেপি। এ নিয়ে দিল্লির নেতাদের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন রাজ্যের তহবিল সামলানোর দায়িত্বপ্রাপ্তরা। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ সাওয়ার ধানানিয়ার কথায়, দিল্লির থেকে আসা বিশেষ দল রাজ্যে খরচের দায়িত্ব সামলেছে। তারা কেবল ওই দলকে সহযোগিতা করেছেন। যদিও দলের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ আশিস বাপট কোন মন্তব্য করেননি।