দেশ বিভাগে ফিরে যান

মৃত্যুর পরও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা! গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে নোংরা খেলায় মত্ত মোদী!

July 16, 2022 | 2 min read

গুজরাত দাঙ্গাকে ঘিরে ফের আলোড়ন দেশের রাজনীতিতে। দরজার কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন, তার আগেই পুরদস্তুর রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় নামল মোদী সরকার। গুজরাতের তদানিন্তন বিজেপি সরকারকে ফেলতে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেলের থেকে নাকি ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন সমাজকর্মী তিস্তা সীতলওয়াড়। আমদাবাদের দায়রা আদালতে হলফনামা দিয়ে এমনই অভিযোগ করছে গুজরাত পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল।

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গা চলাকালীন গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ড মামলায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীসহ বেশ কয়েক জনকে ক্লিনচিট দিয়েছিল সিট। যার বিরোধিতা করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছিল। কিছুদিন আগেই সেই মামলা খারিজ করে সুপ্রিমকোর্ট। গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে কোন মিথ্যা তথ্যপ্রমাণ তিস্তা পেশ করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরের দিনই ২৫ জুন গুজরাত জঙ্গি দমন শাখার হাতে গ্রেপ্তার হন মামলাকারী তিস্তা সীতলওয়াড়৷

ওই গ্রেপ্তারির প্রেক্ষিতে জামিনের আবেদন করেছিলেন তিস্তা। জামিনের আবেদনের মামলায় সিট হলফনামায় দিয়ে জানিয়েছে, ২০০২ সালে মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গোধরা-কাণ্ডের পর গুজরাত সরকারকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেলের সঙ্গে তিস্তাও সামিল হয়েছিল। যার নেপথ্যে নাকি আর্থিক লেনদেন ছিল। শুধু তাই নয় তিস্তা, শ্রীকুমার থেকে শুরু করে সঞ্জীব ভাটের মতো কয়েকজনকে আহমেদ প্যাটেল টাকাও দিয়েছেন বলে দাবি সিটের৷ তিস্তার জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে জমা দেওয়া হলফনামাতেই সিট আহমেদ প্যাটেলের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগটি এনেছে৷

হলফনামার অভিযোগের কথা প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। তিনি সাফ জানিয়েছেন, কংগ্রেস প্রয়াত নেতা আহমেদ প্যাটেলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করছে। সেই সঙ্গেই তিনি অভিযোগ করছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রয়াত নেতাও রেহাই পাচ্ছেন না।

জয়রাম বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর সুপরিকল্পিত কৌশল। গুজরাতের সম্প্রদায়িক দাঙ্গার যাবতীয় অভিযোগ, দায় থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হতে চাইছেন মোদী। সেই কারণ এমন সব পদক্ষেপ নিচ্ছে মোদী সরকার। আহমেদ প্যাটেলকে অভিযুক্ত করাও সেই কৌশলের অঙ্গ৷ গুজরাত দাঙ্গার সময় মোদী নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। তাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী মোদীকে রাজধর্ম পালনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। মোদী গুজরাত দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ করতে পুরোপুরি ব্যর্থ। তার সদইচ্ছা এবং যোগ্যতার অভাবেই গুজরাত জ্বলেছে।

সিটের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে রমেশ বলেন, রাজনৈতিক প্রভুরা যা বলছে সে অনুযায়ী কাজ করছে সিট। মোদী সরকারকে ক্লিনচিট দিতেই, আগে সিটের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে কীভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছিল তা মনে করিয়ে দিয়েছেন রমেশ। রমেশের আরও অভিযোগ, প্রয়াত নেতাকে অভিযুক্ত করা আদপে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজনৈতিক কৌশল। রমেশের কথায়, আহমেদ প্যাটেলকে অভিযুক্ত করা খুব সহজ। কারণ প্রয়াত নেতা নিজের সমর্থনে কোন কথাই বলতে পারবেন না।

রাজনৈতিক কারবারিদের মতে, মৃত ব্যক্তির নামে কোন অভিযোগ করলে তো তার পক্ষে তা খণ্ডন করা বা আত্মপক্ষ সমর্থন করার অবকাশ থাকে না, ফলে সহজ লক্ষ্য হলেন আহমেদ প্যাটেল। গুজরাত দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিস্তা আক্রান্ত পরিবারগুলিকে আইনি সাহায্যও করেছিলেন। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, মোদীর তোতাপাখি হয়ে প্রতিহিংসা মেটানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হল! রাজনৈতিক ফায়াদ তুলতে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের প্রাককালে ফের একবার গোধরা-কাণ্ডকে জিয়ে রাখলেন মোদী।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #Ahmed Patel, #Gujarat Riots, #Teesta Setalvad

আরো দেখুন