ভারতের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হলেন দ্রৌপদী মুর্মু
ভারতের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হলেন দ্রৌপদী মুর্মু। এখনো পর্যন্ত যে ২০টি রাজ্যের ভোট গণনা শেষ হয়েছে তাতে দ্রৌপদী মুর্মু পেয়েছেন ৫,৭৭,৭৭৭ টি ভোট, যশোবন্ত সিনহা পেয়েছেন ২,৬১,০৬২ ভোট। অর্থাৎ, ৫০ শতাংশের ওপর ভোট পেয়ে জয়ী দ্রৌপদী মুর্মু।
গত সোমবার ‘ক্রস ভোট’ ও অর্থের বিনিময়ে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র অভিযোগের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। প্রায় ৯৯ শতাংশ সাংসদ ও বিধায়ক ভোট দিয়েছেন বলে নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়। ২৪ জুলাই শেষ হবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কার্যকালের মেয়াদ। পরের দিন অর্থাৎ ২৫ জুলাই শপথ নেবেন দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি। আজ সব রাজ্য থেকেই ব্যালট বাক্স সংসদে নির্দিষ্ট সময়ে এসে পৌঁছেছে বলে কমিশনের তরফে খবর। এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৪,৭৯৬ জন সাংসদ ও বিধায়ক। অভিনেতা ও সাংসদ সানি দেওল-সহ আটজন সাংসদ ভোট দেননি। ১১টি রাজ্যে ১০০ শতাংশ বিধায়ক ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কমিশন।
তবে এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রথম থেকেই সরগরম ছিল দেশের রাজনীতি। প্রথমে মনে করা হয়, বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলেই প্রার্থী নির্বাচন করবে কেন্দ্রের শাসকদল। বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে। তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পাওয়ার-সহ হেভিওয়েট বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বললেও কাকে প্রার্থী চাইছেন, তা জানাননি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তাই দু’দফা বৈঠকে বসে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহাকে প্রার্থী ঘোষণা করে পদ্মশিবির। তবে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনেন যশবন্ত। প্রার্থীকে জেতাতে বিজেপি অনৈতিক পথ নিচ্ছে। আর্থিক বিনিময়ে ভোট কেনা হচ্ছে বলে ভোট গ্রহণের দিন অভিযোগ করন তিনি। ভোট চলাকালীন অসম, ওড়িশা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে ‘ক্রস ভোটিং’-এর অভিযোগ আসে।
সেলিব্রেশন শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁর গ্রামে। সেখানে হইহুল্লোড় করে বেরোয় শোভাযাত্রাও। এদিনই ভোটগণনা চলার মাঝেই আবার দিল্লির উমা শংকর দিক্ষীত মার্গে দ্রৌপদীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন মোদী।
দ্রৌপদী মুর্মুর জন্ম ১৯৫৮ সালের ২০ জুন। সাঁওতাল পরিবারের এই কন্যা পেশায় ছিলেন শিক্ষিকা। পাশাপাশি ভারতীয় জনতা পার্টির দীর্ঘদিনের সদস্যা ছিলেন। বিজেপি ও বিজু জনতা দলের জোট সরকারের আমলে ওড়িশার মন্ত্রিসভার সদস্যা ছিলেন দ্রৌপদী। ২০০০-২০০৪ পর্যন্ত রাইনগরপুর বিধানসভার কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল হন। ২০১৫ থেকে ২০২১ অবধি ওই পদেই ছিলেন।
জয় নিশ্চিত হতেই দ্রৌপদী মুর্মুকে টুইট করে অভিনন্দন বার্তা পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বার্তায় লিখলেন, এখন সমাজ নানা মতভেদে জর্জরিত। এই সময়ে সংবিধানের মূল চরিত্র এবং গণতন্ত্র রক্ষায় রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি যে ভূমিকা নেবেন তাই নিয়ে দেশবাসী তাঁর ওপর শরণাপন্ন।